‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কেটে ফেলা সেই গাছটি মাদ্রাসায় বিক্রির দাবি মালিকের

মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে ‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে একটি বটগাছ কেটে ফেলার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার (৭ মে) দুপুরে বটগাছটির মালিককে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ সময় গাছের মালিক সাত্তার হাওলাদার দাবি করেন, আমি যেখানে বটবৃক্ষ রয়েছে সেই জমিতে নতুন করে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। এজন্য দীর্ঘদিন ধরেই বটগাছটিকে বিক্রি করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বটগাছটি কর্তন করতে অনেক বেশি টাকা খরচ হবে বিধায় কেউ কিনতে আগ্রহী ছিলেন না। পরে আমি নামমাত্র মূল্যে শ্রীনদী বাইতুস সুন্নত ক্যাডেট মাদ্রাসার কাছে গাছটি বিক্রি করে দেই।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৫ মে সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আলমমীর কান্দি গ্রামের কুমার নদের খেয়া ঘাটে ‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে স্থানীয় মুসল্লিরা একটি পুরোনো বটগাছ কেটে ফেলার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গাছটি কাটা বন্ধ করা হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, ‘এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মাদারীপুর বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমকে প্রধান এবং শিরখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কবির হোসেন ও শিরখাড়া ইউনিয়নের ভূমি উপ–সহকারী কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাককে সদস্য করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপরে বটগাছ কাটার বিষয়টি নিয়ে আইনি কোনো পদক্ষেপ প্রয়োজন হলে, সেই দিকটা দেখব।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মাদারীপুর বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই বটগাছটির বয়স শতবর্ষ হবে না, ৪০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হবে। গাছটির পুরো অংশ মাটি থেকে কেটে ফেলা এখনো হয়নি।’
বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘কারও ব্যক্তিগত জমিতে থাকা কোনো গাছ জমির মালিক বিক্রি বা কাটতে পারেন। সেক্ষেত্রে এই অঞ্চলে আইনি তেমন বাধা নেই।’
শ্রীনদী বাইতুস সুন্নত ক্যাডেট মাদরাসার প্রিন্সিপাল মনিরুজ্জামান মাতুব্বর বলেন, ‘আমরা সাত্তার হাওলাদারের কাছ থেকে বটগাছটি মাদরাসায় ব্যবহারের জন্য কিনেছি। খরচ কমানোর জন্য মুসল্লিদের নিয়ে কাটছিলাম। তার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় এটি আলোচনায় এসেছে।’