যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু

প্রকাশিত: ৪:৪৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

 

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের পর যমুনা রেলওয়ে সেতুর উপর দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি যমুনা রেলওয়ে সেতুর পশ্চিমপাড় অতিক্রম করে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। অপরদিকে, বুড়িমারি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে এসে ১১টা ৫০ মিনিটে সেতুর পূর্বপাড় অতিক্রম করে।

যমুনা রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানিয়েছেন, আজ থেকে নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে নতুন রেল সেতু দিয়ে। তিনি আরো জানান, সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রথম ট্রেন হিসেবে সেতুর উপর দিয়ে যাত্রা করেছে। বর্তমানে, সেতুর দুটি লাইন থাকলেও প্রথমে একটি লাইন দিয়েই উভয়দিকে ট্রেন চলাচল করবে এবং ধীরে ধীরে সিডিউল অনুযায়ী অন্যান্য ট্রেন চলাচল করবে।

প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে, যেখানে যোগাযোগ উপদেষ্টা এবং রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। ওই দিন থেকে দুটি লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হবে এবং বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে আর কোনো ট্রেন চলাচল করবে না।

১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকা এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপন হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতির সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয় এবং প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হতে থাকে।

২০২০ সালে যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেল সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে সেতুর পিলার নির্মাণের পাইলিং কাজ শুরু হয়।

এই রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা, তবে পরবর্তীতে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ প্রদান করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই।