
মাগুরা প্রতিনিধি:
মাগুরার আলোচিত সেই ৮ বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুই পক্ষের আইনজীবীর মধ্যে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে এ যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার আলোচিত এ মামলার আবারও যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত ৮ কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামি শনাক্তকরণ করা হয়। আজ সোমবার যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামীকাল আবারও মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে। এর আগে এ মামলায় মোট ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
যুক্তিতর্কে তিনি বলেন, প্রধান আসামি হিটু শেখের ডিএনএ টেস্ট, ফরেনসিক রিপোর্টে প্রমাণ মিলেছে- সে ওই শিশুকে ধর্ষণ করেছে। এছাড়া সে আদালতে ১৫৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে বলেছে, নিজে ধর্ষণ করেছে। এছাড়া সকল সাক্ষী তার বিপক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছে।
এদিকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী সোহেল আহম্মেদ মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি এটিকে একটি ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে মামলার পুনঃতদন্ত দাবি করেন। এসময় হিটু শেখ তার পুত্রবধূ সজীবের স্ত্রী হামিদাকে আটকের আহ্বান জানান। হামিদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওই ঘটনায় কে জড়িত তা বের হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি। যদিও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ঘটনার সাথে তিনি একাই জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেন।
প্রসঙ্গত বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয় সেই শিশু। পরে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা সিমএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৩ মার্চ শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনায় সেই শিশুর মা, শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, ভগ্নীপতি সজীব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ ও হিটু শেখের স্ত্রী রোকেয়া বেগমের নামে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলায় অভিযুক্ত সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে ও আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৪ আসামির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। বিচারক প্রধান আসামি হিটু শেখকে ৭ দিন এবং অপর তিন আসামির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে প্রধান আসামি হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।