মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা: তিনজন খালাসের রায়ে সন্তুষ্ট নন মা

প্রকাশিত: ৪:২৪ অপরাহ্ণ, মে ১৭, ২০২৫

মাগুরা প্রতিনিধি:

 

মাগুরায় আলোচিত আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখকে (বোনের শ্বশুর) মৃত্যুদণ্ড এবং তিন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

তিন আসামি খালাস পাওয়ায় রায়ে সন্তুষ্ট নন শিশুটির মা। আজ শনিবার সকালে রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে এ প্রতিক্রিয়া জানান শিশুটির মা আয়েশা আক্তার।

তিনি বলেন, ‘হিটু শেখের ফাঁসিতে আমি খুশি। তবে অন্য তিনজনের বেকসুর খালাসে আমি অসন্তুষ্ট।’ আয়েশা আক্তার বলেন, ‘এ ঘটনার তথ্য গোপন ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অপরাধ করেছে খালস তিনজন। এছাড়াও আমার জামাই সজীব শেখ জড়িত ছিল।’ শিশুটির মা আরও বলেন, রায়ের কপি পেলে উচ্চ আদালতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে আপিল করবো।

এর আগে মামলার রায় ঘোষণা করেন মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক এম জাহিদ হাসান। রায়ে বিচারক হত্যা মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখকে (বোনের শ্বশুর) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। এছাড়াও বাকি তিন আসামিকে ‍হিটু শেখের স্ত্রী জাহেদা বেগম, সন্তান সজীব শেখ ও রাতুল শেখকে মামলা থেকে খালাস দেন।

শ্রীপুর উপজেলার আট বছরের শিশুটি ১ মার্চ মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বড় বোনের বাড়ি বেড়াতে যায়। সেখানে সে ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয়। প্রথমে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যার হাসপাতাল, পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়। সবশেষ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শিশুটি মারা যায়।

এ ঘটনায় শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখ, জামাই সজীব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ ও তাদের মা রোকেয়া বেগমের নামে মামলা করেন। পুলিশ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

১৩ এপ্রিল আলোচিত এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন। আসামি রোকেয়া বেগমকে তথ্য গোপন, সজিব শেখ ও তার ভাই রাতুল শেখের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন অভিযোগ আনা হয়েছে।

রায় ঘোষণা শেষে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, দেশব্যাপী আলোচিত এ মামলার রায়ে আসামিদের ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। প্রধান আসামি হিটু শেখের ফাঁসির রায়ের মাধ্যমে প্রতিবাদকারীরা সান্ত্বনা খুঁজে পাবে।

তিনি আরও বলেন, হিটু শেখ ছাড়া তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এ তিন আসামির শাস্তির জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। মাত্র ১৩ কার্যদিবসে মামলার রায় ঘোষণা একটি যুগান্তকারী ঘটনা। স্বল্প সময়ে মধ্যে এ বিচারকার্যে যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।