বিজ্ঞানী-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আন্দোলনে অচল পরমাণু শক্তি কমিশন

প্রকাশিত: ১:৩১ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০২৫

নিজেস্ব প্রতিবেদক:

 

বেশ কিছুদিন ধরে অচল, পরমাণু শক্তি কমিশন। স্বায়ত্তশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠাসহ ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনে, এখানকার বিজ্ঞানী-কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, উন্নয়ন ও গবেষণাতেই যাদের নিমগ্ন থাকার কথা, তারাই এখন বেছে নিয়েছেন আন্দোলনের পথ। ১১ দফা দাবি আদায়ে চলছে ধারাবাহিক কর্মসূচি।

মোটা দাগে দাবি গুলোর মধ্যে আছে- পরমাণু শক্তি কমিশনের স্বায়ত্তশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, কমিশনের শূণ্য পদে স্থায়ী নিয়োগ; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধথ; নিউক্লীয় তথ্যের গোপনীয়তা সংক্রান্ত উপযোগিতা যাচাই ছাড়াও সরকারের বাজেট, ব্যয়সহ সার্বিক আর্থিক ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজড করার জন্য তৈরি আইবাস প্লাস প্লাসের মতো কোন সমন্বিত উদ্যোগে যেতে না চাওয়া; আইডিএসডিপিতে বাধ্যতামূলক নিবন্ধনে অনীহার মতো অনেক কিছুই।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ বলেন, আমরা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছি, উনি আশ্বস্ত করেছেন বিষয়গুলো দেখবেন, কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা কোনো অগ্রগতি দেখিনি বরং আরও বেশি হস্তক্ষেপ শুরু করেছে। আর অন্যদিকে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে চলছে সুরাহার চেষ্টা।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান (চলতি দায়িত্বে) ড. মো. কামরুল হুদা বলেন, আমরা চাচ্ছি না এগুলো নিয়ে আরও দীর্ঘসূত্রিতা হোক। সরকার যেভাবে এগোতে চাচ্ছে তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা আমাদেরই প্রদান করা লাগবে। সরকার কখনোই আমাদের প্রতিপক্ষ না।

এসব দাবি-দাওয়া নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই আলোচনা চলছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। তবুও সমাধান মেলেনি পুরোপুরি। এখন মন্ত্রণালয় বলছে, বেতন-ভাতা পেতে আইবাস প্লাস প্লাসে যাওয়া না যাওয়ার লড়াই, সমাধান করবে অর্থ মন্ত্রণালয়। বাকি দাবি নিয়ে এলে হতে পারে আলোচনা।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন, উনাদের বেতন নিয়ে যে সমস্যা সেটা নিয়ে মাননীয় উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা উনাদেরকে বলেছিলাম যেহেতু ফিনান্সের নিয়ম হচ্ছে আইবাস প্লাসে যেতে হবে, যান। উনারা বলেছে ৮৭% কোনো সমস্যা নাই, আমরা বলেছি তাহলে বাকি ১৩% এর সমস্যা আমরা সমাধান করে দিব।

তবে পরমাণুর মতো একটা স্পর্শকাতর খাতের এই অচলাবস্থা কাটাতে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অবশ্যই নিজস্ব সিদ্ধান্ত থাকবে, যেহেতু একটা গবেষণা প্রতিষ্ঠান আমি মনে করি কোনো মন্ত্রণালয়ের নজরদারি করা ঠিক হবে না।

আন্দোলনে ফলে ঢিমেতালে চলছে আইসোটোপ উৎপাদন, পরমাণু চিকিৎসাসহ প্রায় ২৮০টি সেবা কার্যক্রম।