
ডেস্ক রিপোর্ট:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) শুনানি শুরু হয়েছে। মানবিক সংকটে জর্জরিত গাজাবাসীদের সহায়তা নিশ্চিত করতে এই আইনি প্রক্রিয়া বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরের পিস প্যালেসে অনুষ্ঠিত এই শুনানি মানবতার প্রতি আন্তর্জাতিক দায়িত্ব ও ন্যায়বিচারের দাবিকে নতুনভাবে সামনে এনেছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে আইসিজেতে এ শুনানি শুরু হয় এবং এটি পাঁচ দিনব্যাপী চলবে। যদিও ইসরাইল সরাসরি এই মৌখিক শুনানিতে অংশ নিচ্ছে না, তারা লিখিত পরামর্শ ও আপত্তি জমা দিয়েছে। শুনানির সূচনায় সুইডেনের আইনজীবী ও জাতিসংঘের প্রধান আইন উপদেষ্টা এলিনর হামারশোল্ড বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় কোনো দেশ বলপ্রয়োগের মাধ্যমে অন্য দেশের ভূখণ্ড দখল করতে পারে না — এটি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ইসরাইলের ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করার কোনো আইনগত অধিকার নেই এবং ইসরাইলের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
হামারশোল্ড আরও বলেন, ইসরাইলের পার্লামেন্ট জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-কে অবৈধ ঘোষণা করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন। তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন, দখলকারী শক্তি হিসেবে ইসরাইলের দায়িত্ব হলো ফিলিস্তিনি জনগণ ও জাতিসংঘ কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ২০২৪ সালের অক্টোবরে ইসরাইল এই বিতর্কিত বিল পাস করে, যা বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় তোলে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইসরাইলের এই পদক্ষেপ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে তাদের প্রতিষ্ঠাকালীন সনদ ভঙ্গ করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা এবং ইউএন সংস্থার অবমূল্যায়ন বিশ্বে মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক আদালতের এই শুনানির মাধ্যমে গাজাবাসীর ন্যায়বিচার ও মানবিক অধিকার পুনরুদ্ধারের একটি নতুন সুযোগ তৈরি হতে পারে। এখন নজর আইসিজের সিদ্ধান্তের দিকে, যা হয়তো ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের মানদণ্ড নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা