গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আ.লীগ নিষিদ্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে হবে
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেছেন, অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমাদের জানাতে হবে। গণহত্যার বিচারে আমরা আপসহীন।শনিবার (১০ মে) পুরানা পল্টনে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র। সমাবেশ শেষে বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কার, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের অগ্রগতি জানতে গণঅধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিতে যান।
তার আগে এক বিক্ষোভ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের নয় মাস পেরিয়ে গেলেও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয় সিদ্ধান্ত তারা আমাদের জানাতে পারে নাই। আমরা যখনই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তুলি, তখনি তারা আমাদের সামনে নানা অজুহাত হাজির করে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধদের পক্ষে। কিন্তু অন্তর্র্বতীকালীন সরকার আদৌ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে কিনা সেটি নিয়ে সংশয় রয়েছে।
যমুনার সামনে যেসব ছাত্র নেতা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে তাদের ওপর বিশ্বাস নেই জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের এই মুখপাত্র বলেন, গতকাল সমন্বয়করা যমুনার সামনে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল। তারা ঘোষণা করলো আমাদের জীবন যদি চলে যায় তবুও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘোষণা ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা বাসভবন ছাড়বো না। তারা আমাদের বারবার আমন্ত্রণ জানালেন তাদের সঙ্গে শরিক হতে। তখন আমরা বললাম, এই সমন্বয়ক নামধারীদের ওপর আমাদের ন্যূনতম বিশ্বাস নেই, আস্থা নেই। এরা জনগণকে ডেকে আনবে, এরপর সরকারের একটা ফোন কল পেলে আবার আন্দোলন গুটিয়ে তারা বাড়ি ফিরে যাবে। আমরা যে আশঙ্কা করেছিলাম, সেটি বাস্তবায়ন হয়েছে। আপনারা সবাই দেখেছেন বিকেলের মধ্যে যমুনা ছেড়ে তারা ফিরে গেছে। আমাদের প্রশ্নটা এখানেই, যদি তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাইতো তাহলে তারা যমুনা ছেড়ে যেত না; অবস্থান ত্যাগ করবে না।
সমন্বয়কদের আন্দোলনকে জান্নাতি আন্দোলন আখ্যা দিয়ে ফারুক হাসান বলেন, আমরা যখন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে পল্টন মোড়ে গতকাল অবস্থান করলাম তখন পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিপেটা করল। আর সমন্বয়ক নামধারীদের অনেক প্রটেকশন দিয়ে আন্দোলন করাচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন তাদের ঠান্ডা পানি ছিটাচ্ছে। যেন এখানে জান্নাতি আন্দোলন শুরু হয়েছে। এখান থেকে আমরা আমাদের সন্দেহের শতভাগ নিশ্চয়তা পেয়েছি। এদের আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে, এটা বিশ্বাস করা যায় না।
তিনি বলেন, আমরা তিন দাবিতে আমাদের এ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছি। এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমাদের জানাতে হবে। গণহত্যার বিচারে আমরা আপসহীন। ইতোমধ্যে তারা আরও একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে, প্রয়োজনে আরও চারটি ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানাচ্ছি। তারপরও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিশ্চিত বিচার আমরা দেখতে চাই। এরপর যারা আহত ও শহীদ হয়েছেন তাদের যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের বর্তমান যে ফিটনেস, এটি দিয়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার যেন জাতীয় সরকারে রূপান্তর হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তারা পল্টন এলাকায় একটি মিছিল করে। মিছিল শেষে পাঁচ সদস্য প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা বাসভবনের উদ্দেশ্যে স্মারকলিপি দিতে যান।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন প্রমুখ।