
নিজেস্ব প্রতিবেদক:
জামিন না দেওয়ায় এজলাসে বিচারককে শাসানো ও ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ তকমা দিয়ে গালিগালাজ করা আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিন কর্মদিবস সময় বেঁধে দিয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
ওই সময়ের মধ্যে দোষী আইনজীবীদের সনদ বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সংগঠনের এক বিবৃতিতে।
সোমবার (১৯ মে) সংগঠনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই ঘটনার মাধ্যমে শুধু একজন বিচারককে অপমান করা হয়নি, বরং গোটা দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগের ভিত্তি কেঁপে উঠেছে। বিচারকের স্বাধীনতা- নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে, যা একটি সভ্য, গণতান্ত্রিক, আইনশাসিত দেশে কাম্য নয়। এজলাসে অরাজকতা সৃষ্টি, বিচারকের প্রতি হুমকি ও অপমান, বিচারকার্যে অবৈধ বলপ্রয়োগ দণ্ডবিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
জানা গেছে, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় হানিফ মেম্বার নামে এক আসামি গত ১২ মে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ১৫ মে তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী। ১৭ মে শুনানি শেষে আসামিকে জামিন না দেওয়ায় বিচারককে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ তকমা দিয়ে গালিগালাজ করেন কয়েকজন আইনজীবী।
ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে ১৮ মে বিএনপিপন্থি চার আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিচারিক কর্তৃত্বকে পাশ কাটিয়ে পেশী শক্তি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিজেরপক্ষে আদেশ আদায়ের অপচেষ্টা স্পষ্টভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা ও শৃঙ্খলার ওপর আঘাত। বিচারককে অপমান করার ঘটনাকে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অপতৎপরতা হিসেবে দেখছে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।’