বড়পুকুরিয়ার খনিশ্রমিকদের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

প্রকাশিত: ৬:১৮ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০২৫

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

 

দিনাজপুরর ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে কর্মরত ১৭৪জন খনিশ্রমিকের চাকরি সাব কন্টাক্ট বাতিল করে বিসিএমসিএল-এর সঙ্গে অন্তর্ভূক্তিকরণ অথবা সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশসহ সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী খনি শ্রমিকরা।

রোববার (১৮ মে) সকাল ১১টার দিকে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির প্রধান ফটকের সামনে থেকে খনি এলাকায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাব কন্টাক্টের মাধ্যমে ভূগর্ভে কর্মরত ভুক্তভোগী খনিশ্রমিকরা।

মিছিল শেষে খনি গেটের সামনে আয়োজিত সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন শ্রমিকনেতা শহিবুল ইসলাম বাবু।

লিখিত বক্তব্যে শ্রমিকনেতা শহিবুল ইসলাম বাবু শ্রমিকদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা কয়লাখনির অভিজ্ঞ শ্রমিক। ৫/৭ বছর থেকে খনিতে কর্মরত রয়েছি। আমাদের অন্য কোন সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সও নেই। এদিকে জমিজমা, ক্ষেত খামার সবই খনির কারণে ভূমি অবনমনে জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। খনি কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন খনি যতদিন থাকবে, আমাদের চাকরিও ততদিন থাকবে। তাহলে আজ কেন আমাদের চাকরি থাকবে না বলে জানানো হচ্ছে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৪০০ফুট মাটির নিচে গিয়ে কাজ করি। চুক্তি অনুযায়ী কোন শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার হলে তার পরিবার আর্থিক ক্ষতি পূরণ পাবে। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ ৫ মাস থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিএসএমই কোন ক্ষতিপূরণ দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। তাহলে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেন কাজ করবো।

এসময় শ্রমিকরা জেএসএমই এর সাথে সাব কন্টাক্ট বাতিল করে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) এর সঙ্গে অন্তর্ভূক্তিকরণ অথবা চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে নিয়োগের দাবি জানান। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খনি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সঠিক কোন উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হলে আগামীতে কঠোর আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার আল্টিমেটাম ঘোষণা করা হয়।

ভুক্তভোগী খনিশ্রমিকরা জানান, বড়পুকুরিয়া খনির কারণে তাদের বাড়িঘর, ফসলি জমি, কর্মসংস্থান সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ২০ গ্রামের বাসিন্দাদের প্রত্যেক পরিবার থেকে খনিতে চাকরি দেয়ার কথা থাকলেও কিছু কিছু পরিবারে লোকজনকে চাকরি দেয়া হলেও বেশিরভাগই পরিবার কোন চাকরি পায়নি। যারা চাকরি পেয়েছেন তাদেরকে সাব কন্টাক্টর জেএসএমই এর সাথে চুক্তিবব্ধ করা হয়। আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যে জেএসএমই এর চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। এরিমধ্যে গত ৬ মে জেএসএমই ভূগর্ভস্থ শ্রমিকদের জীবন ঝুঁকির কোন দায় নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। এরপর থেকে ১৭৪জন খনি-শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করছেন। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সারা না দিয়ে শ্রমিকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা তাদের জীবন ও কর্ম রক্ষার দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করেছেন।

খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন এন্ড অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক বলেন, খনির মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়াম তাদের কাজের কিছু অংশ জেএসএমই কে সাব কন্টাক্ট দিয়েছে। তাদের কাজ ছিল ভূগর্ভে টানেল তৈরি করা। টানেল তৈরির ছয় মাসের মধ্যে শেষ হবে। ওই কাজ শেষ হলে চীনা ঠিকাদার সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের চীনা কর্মীরাও চলে যাবেন। এইসব শ্রমিকের কাজ যেহেতু শেষ, তাহলে তারা কিভাবে থাকবে। এরপরও খনির পক্ষ থেকে তাদেরকে অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু তারা অভিজ্ঞ এবং খনি এলাকার সেহেতু আগামীতে নতুন কোন সুযোগ হলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

 

গরমে ক্লান্তি দূর করবে যেসব খাবার

তীব্র গরমে অতিষ্ট মানুষ। গরমের পাশাপাশি রয়েছে ব্যস্ততা। যতই দিন যাচ্ছে, ততই মানুষের ব্যস্ততা বাড়ছে। সারাদিনের কাজের চাপ, ব্যস্ততার কারণে শরীরে ক্লান্ত লাগাটাই স্বাভাবিক। নিজেকে সুস্থ রাখতে তাই ব্যায়ামের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। সেক্ষেত্রে খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন কিছু খাবার। এসব খাবার যেমন শরীরের ক্লান্তি দূর করে তেমনি শক্তিও জোগায়। তাই আসুন জেনে নিই গরমে ক্লান্তি দূর করতে যেসব খাবার খাবেন-

১. লেবু পানি
গরমের সময় লেবুর শরবত পান করলে তা শরীরের ক্লান্তি দূর করবে। সেক্ষেত্রে একদম সাধারণ পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। তবে যাদের হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ নেই, তারা স্বাদের জন্য সামান্য লবণও ব্যবহার করতে পারেন।

২. ওটস
কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিন বি-এর পরিমাণ ওটসের মধ্যে প্রচুর। এই দুই উপকরণ শরীরে ভরপুর এনার্জির জোগান দেয়। সকালের নাশতায় তাই ওটস রাখা জরুরি। ফাইবার সমৃদ্ধ ওটস অনেকক্ষণ পেটও ভরিয়ে রাখে। এতে বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।

৩. দই

দই এ প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে। যা এনার্জির ঘাটতি পূরণ করার সবচেয়ে জরুরি উপাদান। তাই প্রতিদিন ১ কাপ দই খান। ক্লান্তি আসবে না শরীরে।

৪. চর্বিহীন প্রোটিন
চর্বিহীন প্রোটিন সুষম খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি ক্লান্তির সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন প্রাণিজ প্রোটিন; যেমন মুরগি, ডিম, টার্কি, চর্বিযুক্ত মাছ এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিন; যেমন লেগুম, টফু, সয়া পণ্য, ডাল ইত্যাদি রাখতে হবে।

৫. বাদাম ও বীজ
বাদাম ও বীজ আপনার শরীরের ক্লান্তি দূর করতে এবং ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য সেরা খাবার। তাই আপনার প্রতিদিনের খাবারে বাদাম ও বীজ রাখুন। এটি আপনার শরীরে স্বাস্থ্যকর পুষ্টি এবং শক্তি সরবরাহ করে ক্লান্তিভাব দূর করবে।

৬. কাঁচা আমের শরবত
কাঁচা আমের মাঝে ভিটামিন-সি থাকে। কাঁচা আমের সাথে মরিচ যুক্ত না করে যদি এটিকে শরবত হিসেবে খাওয়া যায়, তাহলে গরম কম অনুভব হতে পারে।

৭. কম মশলা জাতীয় খাবার
মশলা জাতীয় ভারি খাবার খেতে ভালো লাগলেও গরমের সময় কম মশলা জাতীয় খাবারের ওপর জোর দিতে হবে। কারণ এগুলো সহজে হজমযোগ্য।

৮. পালংশাক
এই শাকে থাকা আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম শরীরের ক্লান্তি দূর করবে সহজেই। তাই খাদ্যতাীরকায় মাঝে মাঝে পালংশাকের রেসিপি রাখুন।তবে প্রতিদিন খেলে পেটে সমস্যা হতে পারে। এজন্য মাঝেমধ্যে খান। তবে কাঁচা না খাওয়াই ভালো।

৯. চা বা কফি

শরীরকে চাঙা করতে চা বা কফি বিশেষ সহায়ক। এটি হৃৎযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বাড়ায় এবং শরীরকে উদ্দীপ্ত রাখে। তবে চা বা কফি বেশি পান করলে রাত্রে নিদ্রাহীনতা দেখা দিতে পারে।

১০. কলা
কলা আপনার শরীরে শক্তি সরবরাহ করার জন্য অন্যতম একটি ভালো খাবার। এতে থাকা পটাশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন এবং কার্বোহাইড্রেট আপনার শরীরে শক্তি সরবরাহের একটি বড় উৎস হিসেবে কাজ করবে এবং আপনাকে ক্লান্তিভাব দূর করতেও সহায়তা করবে।

১১. পাতলা স্যুপ
স্যুপকে অনেকে মজা করে রোগীর খাবার বলে থাকেন। তবে গরমের সময় একদম ‘ক্লিয়ার ভেজিটেবল’ স্যুপ (পাতলা করে সবজি স্যুপ) খেলে তা শরীরের জন্য উপকারী।