
নিজেস্ব প্রতিবেদক:
ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে ধরপাকড় শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে ‘পুশ-ব্যাক’ করে দেওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে যেটিকে ‘পুশ-ব্যাক’ বলা হয়, বাংলাদেশের চোখে সেটিই ‘পুশ-ইন’।
সীমান্তে পুশ-ব্যাক বা পুশ-ইন বলতে বোঝায় এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ধরা পড়া ব্যক্তিদের সীমান্তে নিয়ে গিয়ে অন্য দেশের ভূখণ্ডে ঠেলে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ার কোনো আইনি স্বীকৃতি ভারতে নেই, তবে দীর্ঘদিন ধরেই এটি চলে আসছে। যদিও সরকারিভাবে কেউই এই পদ্ধতিকে স্বীকার করে না, তথাপি তা বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে।
ভারতের মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, ভারত থেকে এভাবে পুশ-ব্যাক করা সম্পূর্ণই আইনবহির্ভূত। তবে কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিংবা পাচারের শিকার নারীদের মানবিক দিক বিবেচনায় বিএসএফ আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি থাকা প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেয়।
গুজরাটে যাদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করা হয়েছিল, তাদেরই একাংশ
কাদের পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে?
শুধুমাত্র ভারতের গুজরাট ও রাজস্থান রাজ্যেই গত তিন সপ্তাহে এক হাজারেরও বেশি মানুষকে চিহ্নিত করেছে ওই রাজ্যগুলোর পুলিশ। তাদের দাবি অনুযায়ী, এই চিহ্নিত ব্যক্তিরা বেআইনিভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে বসবাস করছিলেন।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি যাদের সীমান্ত দিয়ে পুশ-ব্যাক করা হয়েছে, তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিরাও রয়েছেন যাদের গুজরাট থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। আবার রাজস্থান থেকে ধরা পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪৮ জনের একটি দলকে বিশেষ বিমানে চাপিয়ে ত্রিপুরার আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে বৃহস্পতিবার রাতে যে পুশ-ব্যাকের চেষ্টা হয়েছিল, তাদের মধ্যে কেউ রাজস্থানে ধরা পড়া কথিত বাংলাদেশি কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গুজরাট ও রাজস্থানের পুলিশ জানিয়েছে, যাদের বাংলাদেশি পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে, তাদের সকলকেই ফেরত পাঠানো হবে।
এছাড়াও ওড়িশা ও অন্যান্য রাজ্যেও এমন বাংলাদেশি সন্দেহে ধরা হচ্ছে, যাদের পুলিশের ভাষায় ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
রাজস্থানে ‘অবৈধ’ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর জন্য বাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বুধবার
‘অবৈধ’ বিদেশিদের জন্য আইনে কী আছে?
আইন অনুযায়ী, কাউকে গ্রেফতার করা হলে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার বিধান রয়েছে, যা বিদেশিদের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য। ভারতের মানবাধিকার সংগঠন মাসুম দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত হত্যা ও এ-সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করছে।
সংগঠনটির প্রধান কিরীটি রায় বলেন, ‘বিদেশ থেকে কেউ পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া ভারতে এলে, তাকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে। এরপর ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’-এর ১৪ নম্বর ধারায় মামলা হবে। আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি হবে এবং সাজা শেষে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, ভারতের মাটিতে অবস্থানকালে বিদেশিরাও সেই একই অধিকার পান, যেটা একজন ভারতীয় পান। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এই পদ্ধতি উপেক্ষা করে সরাসরি সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণভাবে আইন ও সংবিধান পরিপন্থী।’
এছাড়াও বহু ঘটনা রয়েছে যেখানে বাংলাদেশিসহ অন্যান্য বিদেশি নাগরিকরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে জেল খেটেছেন। কিন্তু সাজা শেষ হওয়ার অনেক মাস পরেও তারা দেশে ফিরতে পারেননি, কারণ তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে সময়সাপেক্ষ কূটনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এসব বন্দিদের সাধারণত ‘জান খালাস কয়েদি’ বলা হয়ে থাকে।
আইনবহির্ভূত পদ্ধতি
গুজরাট ও রাজস্থানে যাদের ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে ধরা হয়েছে, তাদের অধিকাংশকেই আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সরাসরি পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের সহায়তার জন্য গঠিত একটি সংগঠন ‘পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ’ হেল্পলাইন চালু করেছে। সংগঠনটির রাজ্য সম্পাদক আসিফ ফারুক জানান, ‘প্রায় এক মাস হলো আমরা হেল্পলাইন চালু করেছি। গুজরাট থেকে প্রায় ৫৫০টি এবং রাজস্থান থেকে প্রায় ২০০টি ফোন পেয়েছি। এসব ফোন পাওয়ার পর আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের মুক্ত করার ব্যবস্থা করেছি। এ পর্যন্ত গুজরাটের ৬৮টি এবং রাজস্থানের ১০৯টি ঘটনায় আমরা সমাধান দিতে পেরেছি। কিন্তু মাত্র একটিমাত্র ঘটনার ক্ষেত্রে জানা গেছে যে এক ধৃত ব্যক্তিকে আদালতে তোলা হয়েছিল এবং তিনি এখন ডিটেনশন ক্যাম্পে রয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই ব্যক্তি ছাড়া আর কাউকে আদালতে তোলা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।’
অন্যদিকে, গুজরাট পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ‘আটক করার পর সরাসরি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে পাঠানো হচ্ছে। বাংলাদেশি হিসেবে প্রমাণিত হলে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।’ উল্লেখযোগ্যভাবে, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আদালতে হাজির করার বিষয়টি তিনি বলেননি।
আইনি পথে ফেরত নয় কেন?
গুজরাট, রাজস্থানের পুলিশ ও ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। বিএসএফ বরাবরই বলে এসেছে যে তাদের ডিকশনারিতে ‘পুশ-ব্যাক’ শব্দটি নেই।
তবে নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সম্প্রতি যাদের অবৈধ বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের ছোট-বড় দলে ভাগ করে পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে।
সূত্রগুলো জানায়, যদি গ্রেফতার দেখানো হয়, তাহলে মামলা হবে, সাজা হলে জেলে রাখতে হবে এবং পরে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শেষে দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ এবং এতে বছরের পর বছর লেগে যেতে পারে।
একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এখন যেহেতু শত শত অবৈধ বাংলাদেশি ধরা পড়ছে, এদের যদি সবাইকে আইনি প্রক্রিয়ায় গ্রেফতার করতে হয়, তাহলে জেলখানায় জায়গা হবে না। অন্য বন্দিদের বের করে দিতে হবে।’
তার মতে, ‘এই পুশ-ব্যাক নিয়ে সমস্যা কোথায়? বাংলাদেশিদেরই তো তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।’
তবে এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে পুশ-ব্যাকের কথা স্বীকার করেনি।
নিজেস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের সীমান্তে ভারত কাদের ঠেলে দিচ্ছে?
ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে ধরপাকড় শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে ‘পুশ-ব্যাক’ করে দেওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে যেটিকে ‘পুশ-ব্যাক’ বলা হয়, বাংলাদেশের চোখে সেটিই ‘পুশ-ইন’।
সীমান্তে পুশ-ব্যাক বা পুশ-ইন বলতে বোঝায় এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ধরা পড়া ব্যক্তিদের সীমান্তে নিয়ে গিয়ে অন্য দেশের ভূখণ্ডে ঠেলে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ার কোনো আইনি স্বীকৃতি ভারতে নেই, তবে দীর্ঘদিন ধরেই এটি চলে আসছে। যদিও সরকারিভাবে কেউই এই পদ্ধতিকে স্বীকার করে না, তথাপি তা বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে।
ভারতের মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, ভারত থেকে এভাবে পুশ-ব্যাক করা সম্পূর্ণই আইনবহির্ভূত। তবে কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিংবা পাচারের শিকার নারীদের মানবিক দিক বিবেচনায় বিএসএফ আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি থাকা প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেয়।
গুজরাটে যাদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করা হয়েছিল, তাদেরই একাংশ
কাদের পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে?
শুধুমাত্র ভারতের গুজরাট ও রাজস্থান রাজ্যেই গত তিন সপ্তাহে এক হাজারেরও বেশি মানুষকে চিহ্নিত করেছে ওই রাজ্যগুলোর পুলিশ। তাদের দাবি অনুযায়ী, এই চিহ্নিত ব্যক্তিরা বেআইনিভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে বসবাস করছিলেন।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি যাদের সীমান্ত দিয়ে পুশ-ব্যাক করা হয়েছে, তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিরাও রয়েছেন যাদের গুজরাট থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। আবার রাজস্থান থেকে ধরা পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪৮ জনের একটি দলকে বিশেষ বিমানে চাপিয়ে ত্রিপুরার আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে বৃহস্পতিবার রাতে যে পুশ-ব্যাকের চেষ্টা হয়েছিল, তাদের মধ্যে কেউ রাজস্থানে ধরা পড়া কথিত বাংলাদেশি কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গুজরাট ও রাজস্থানের পুলিশ জানিয়েছে, যাদের বাংলাদেশি পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে, তাদের সকলকেই ফেরত পাঠানো হবে।
এছাড়াও ওড়িশা ও অন্যান্য রাজ্যেও এমন বাংলাদেশি সন্দেহে ধরা হচ্ছে, যাদের পুলিশের ভাষায় ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
রাজস্থানে ‘অবৈধ’ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর জন্য বাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বুধবার
‘অবৈধ’ বিদেশিদের জন্য আইনে কী আছে?
আইন অনুযায়ী, কাউকে গ্রেফতার করা হলে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার বিধান রয়েছে, যা বিদেশিদের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য। ভারতের মানবাধিকার সংগঠন মাসুম দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত হত্যা ও এ-সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করছে।
সংগঠনটির প্রধান কিরীটি রায় বলেন, ‘বিদেশ থেকে কেউ পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া ভারতে এলে, তাকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে। এরপর ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’-এর ১৪ নম্বর ধারায় মামলা হবে। আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি হবে এবং সাজা শেষে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, ভারতের মাটিতে অবস্থানকালে বিদেশিরাও সেই একই অধিকার পান, যেটা একজন ভারতীয় পান। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এই পদ্ধতি উপেক্ষা করে সরাসরি সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণভাবে আইন ও সংবিধান পরিপন্থী।’
এছাড়াও বহু ঘটনা রয়েছে যেখানে বাংলাদেশিসহ অন্যান্য বিদেশি নাগরিকরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে জেল খেটেছেন। কিন্তু সাজা শেষ হওয়ার অনেক মাস পরেও তারা দেশে ফিরতে পারেননি, কারণ তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে সময়সাপেক্ষ কূটনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এসব বন্দিদের সাধারণত ‘জান খালাস কয়েদি’ বলা হয়ে থাকে।
আইনবহির্ভূত পদ্ধতি
গুজরাট ও রাজস্থানে যাদের ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে ধরা হয়েছে, তাদের অধিকাংশকেই আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সরাসরি পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের সহায়তার জন্য গঠিত একটি সংগঠন ‘পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ’ হেল্পলাইন চালু করেছে। সংগঠনটির রাজ্য সম্পাদক আসিফ ফারুক জানান, ‘প্রায় এক মাস হলো আমরা হেল্পলাইন চালু করেছি। গুজরাট থেকে প্রায় ৫৫০টি এবং রাজস্থান থেকে প্রায় ২০০টি ফোন পেয়েছি। এসব ফোন পাওয়ার পর আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের মুক্ত করার ব্যবস্থা করেছি। এ পর্যন্ত গুজরাটের ৬৮টি এবং রাজস্থানের ১০৯টি ঘটনায় আমরা সমাধান দিতে পেরেছি। কিন্তু মাত্র একটিমাত্র ঘটনার ক্ষেত্রে জানা গেছে যে এক ধৃত ব্যক্তিকে আদালতে তোলা হয়েছিল এবং তিনি এখন ডিটেনশন ক্যাম্পে রয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই ব্যক্তি ছাড়া আর কাউকে আদালতে তোলা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।’
অন্যদিকে, গুজরাট পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ‘আটক করার পর সরাসরি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে পাঠানো হচ্ছে। বাংলাদেশি হিসেবে প্রমাণিত হলে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।’ উল্লেখযোগ্যভাবে, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আদালতে হাজির করার বিষয়টি তিনি বলেননি।
আইনি পথে ফেরত নয় কেন?
গুজরাট, রাজস্থানের পুলিশ ও ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। বিএসএফ বরাবরই বলে এসেছে যে তাদের ডিকশনারিতে ‘পুশ-ব্যাক’ শব্দটি নেই।
তবে নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সম্প্রতি যাদের অবৈধ বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের ছোট-বড় দলে ভাগ করে পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে।
সূত্রগুলো জানায়, যদি গ্রেফতার দেখানো হয়, তাহলে মামলা হবে, সাজা হলে জেলে রাখতে হবে এবং পরে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শেষে দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ এবং এতে বছরের পর বছর লেগে যেতে পারে।
একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এখন যেহেতু শত শত অবৈধ বাংলাদেশি ধরা পড়ছে, এদের যদি সবাইকে আইনি প্রক্রিয়ায় গ্রেফতার করতে হয়, তাহলে জেলখানায় জায়গা হবে না। অন্য বন্দিদের বের করে দিতে হবে।’
তার মতে, ‘এই পুশ-ব্যাক নিয়ে সমস্যা কোথায়? বাংলাদেশিদেরই তো তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।’
তবে এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে পুশ-ব্যাকের কথা স্বীকার করেনি।