গ্রাউন্ড ফ্লোরেই ছিল সেই ‘আয়নাঘর’, আদালতে আসামির জবানবন্দি

প্রকাশিত: ১:২১ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০২৫

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

 

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় একটি ব্যক্তিগত আয়নাঘরে দুইজন নারী ও পুরুষকে বন্দি করে রাখার ঘটনায় আলোচিত সেই বাড়ির মালিক গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালতে স্বীরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (১) এর বিচারক আলমগীর হোসেন ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করে সন্ধ্যায় কারাগারে প্রেরণ করেন।

গ্রেপ্তার সুমন সেখ (২৩) রায়গঞ্জ উপজেলার সোনারাম মধ্যপাড়ার জহুরুল ইসলামের ছেলে এবং আলোচিত ওই আয়নাঘরের মালিক। এ নিয়ে মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করাহ হয়েছে। মূলত জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তাদের বন্দি করে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই আয়নাঘরে আব্দুল জুব্বার (৭৫) ও শিল্পী বেগম (৪৮) নামের দুজন দীর্ঘ দিন বন্দি অবস্থায় ছিলেন। এরমধ্যে আব্দুল জব্বারকে ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর এবং শিল্পী বেগমকে ১২ ডিসেম্বর অপহরণ করা হয়েছিল। গত ১ মে গভীর রাতে নিজেদের তৈরি করা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ লোকজন সুমন সেখের বাড়িতে হামলা চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে।

পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুল জুব্বারের ছেলে শফিকুল ইসলাম ও শিল্পী বেগমের স্বামী মনসুর আলী বাদী হয়ে আলাদা দুটি মামলা করেছেন। শফিকুলের মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৫-৬জন এবং মনসুর আলীর মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে।

এর আগে ঘটনার দিন প্রধান আসামি পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীকোলা গ্রামের রেজাউল করিম তালুকদারের ছেলে এবং একটি জাতীয় পত্রিকার রায়গঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি। এ ঘটনার পর তাকে রায়গঞ্জ প্রেস ক্লাব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রায়গঞ্জ থানার এস আই নাজমুল হক বলেন, গ্রেপ্তার সুমন সেখ এ ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ঘটনার দিন মামলার প্রধান আসামি পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

নাজমুল হক আরও বলেন, জবানবন্দিতে সুমন সেখ জানিয়েছে পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত তাদের বাসা ভাড়া নিয়ে নিচের ফ্লোরে দুইটি রুম তৈরি করেন। যেখানে দুইজন নারী ও পুরুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। তিনি নিজে তাদের খাবার সরবরাহ করতেন। আরাফাতসহ অজ্ঞাত ২-৩জন সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করতো।