‘ময়লা ফেলা নিষেধ’ লেখা সাইনবোর্ডের পাশেই ভাগাড়

প্রকাশিত: ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ, মে ১৪, ২০২৫

যশোর প্রতিনিধি:

সাইনবোর্ড স্থাপন করে লেখা ‌‘এই জমি অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতাধীন, সরকারি জায়গা। এখানে ময়লা-আর্বজনা ফেলা নিষেধ।’ তবুও ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। যশোর-খুলনা মহাসড়ক ঘেঁষে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার রাজঘাট ৯নং ওয়ার্ডের শেষ সীমানায় সড়কের পাশে অবস্থিত শিল্প ক্লিনিকের সামনে খালি জায়গা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যার দুর্গন্ধে চরম বিপাকে পড়ছেন পথচারীসহ এলাকাবাসী।

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, রাজঘাট ৯নং ওয়ার্ডের শেষ সীমানা সড়কের পাশে অবস্থিত শিল্প ক্লিনিকটি জুড়ে রয়েছে ময়লার স্তূপ। যার আয়তন ২.৬১ একর। নব্বই দশকে কয়েকবার ডাকাতি হওয়ার পর থেকেই ক্লিনিকটি বন্ধ হয়ে যায়। সাবেক মেয়র ক্ষমতায় আসার পর থেকে আট বছর ধরে এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। আগে বহুবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই স্থানে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, এই জমি অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতাধীন, সরকারি জায়গা। এখানে ময়লা আর্বজনা ফেলা নিষেধ । আদেশক্রমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নামে সাইন বোর্ড থাকলেও, কাজে উল্টো চিত্র দেখা গেল।শিল্প ক্লিনিকটির আয়তন ২.৬১ একর । যার প্রতিটি স্থানেই রয়েছে বড় বড় সব ময়লার স্তুপ। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি শিল্প ক্লিনিক। এর গেটে রয়েছে একটি বড় ময়লার স্তুপ।

পৌরসভা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২৫.১২ বর্গ কিলোমিটারের এ পৌরসভায় ১১ হাজার পরিবারে ৬২ হাজার মানুষের বসবাস। পৌরসভায় ২৫ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন। কিন্তু শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য পৌরসভার কোনো নির্দিষ্ট স্থান নেই। এর ফলে প্রতিদিন সাত থেকে আট ট্রাক ময়লা এনে সড়কের পাশে ফেলছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলিমুর রাজিব বলেন, পৌরসভার শিল্প ক্লিনিকটি দীর্ঘ আট-নয় বছর ধরে ময়লা ফেলে ভাগাড়ে পরিণত করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। ময়লা অপসারণের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। ময়লা অপসারণের পরে আমরা এখানে একটি ট্রেনিং সেন্টার করার পরিকল্পনা করছি।

রাজঘাট এলাকার বাসিন্দা সামস্ শারফিন বলেন, শিল্প ক্লিনিকটি মূলত তৈরি করা হয়েছিল জে জে আই মিলকে কেন্দ্র করে। এছাড়াও আশপাশের এলাকার মানুষের সেবার কাজে আসতো ক্লিনিকটি। বহু আগে কয়েকবার ডাকাতি হওয়ায় ক্লিনিকটি বন্ধ করে দিয়েছি। এরপর থেকে আট নয় বছর ধরে এখানে ময়লা ফেলে আসছে নওয়াপাড়া পৌরসভা। আমরা এলাকাবাসীরা প্রতিবাদ করেও কোন প্রতিকার করতে পারেনি।

মেছেরাবাদ আলেয়াতুন্নেসা (রা.) মাদরাসা ও এতিমখানার মালিক রবিউল হক বলেন, রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনার স্তুপ থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে ওই স্থানে থাকা অনেক কষ্টকর। এ বিষয়ে বেশ কয়েক জায়গায় অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। তারপর থেকে ৮টি বছর ধরে আমার মাদরাসাটা বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয় পৌরসভার সচিব সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়কের পাশে নওয়াপাড়া শিল্প ক্লিনিক অনেক দিন ধরে বন্ধ থাকায় প্রায় ছয়-সাত বছর এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। আমাদের ময়লা ফেলার কোনো জায়গা নেই। আমরা জমি অধিগ্রহণ করার জন্য কাজ করছি। খুব তাড়াতাড়ি একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে। ময়লা ফেলার জায়গা পেলে এখানকার সব ময়লা সরিয়ে নেওয়া হবে।