
ডেস্ক রিপোর্ট:
জাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। সম্পদের পরিশুদ্ধি ও অসহায়দের মাঝে স্বচ্ছলতা ফেরানো, দারিদ্র বিমোচন জাকাতের অন্যতম উদ্দেশ্য। দ্বিতীয় হিজরিতে মুসলমানদের ওপর জাকাত ফরজ হয়। জাকাতের সঠিকভাবে আদায়ে বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন আল্লাহ তায়ালা। এ সর্ম্পকে বর্ণিত হয়েছে, ‘এবং তোমরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য জাকাত আদায় করো। অত:পর তিনি তা দ্বীগুণ করে দেবেন। (সূরা আর-রুম,আয়াত : ৩৯)
অন্য আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘তারা এমন লোক- যাদেরকে আমি পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করি, তারা নামাজ কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে, সৎকাজের আদেশ করে ও মন্দকাজে বাধা প্রদান করে।’ (সূরা হজ: ৪১)
জাকাত আদায়ে গরিমসি করলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে, ‘আর যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেওয়া হবে। (আর বলা হবে) ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর।’ -(সূরা তাওবাহ, আয়াত: ৩৫, ৩৬)
প্রকৃত হকদারদেরকে যাকাতের অর্থ বুঝিয়ে দেওয়া উচিত এবং জরুরি। তবে কেউ চাইলে একজনকেও যাকাতের পুরো টাকা দিতে পারবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে- বেশি দেওয়ার কারণে আবার তার (গ্রহীতার) ওপর যাকাত জরুরি হয়ে যায় কি না।
যেমন- কারো যাকাত এলো ১০ লাখ টাকা। এখন এ টাকা যদি সে একজনকে দিয়ে দেয়, তবে যাকে দেওয়া হলো সে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে যাবে। কারণ স্বর্ণের নিসাব হলো ৭.৫ তোলা বা ৯৫.৭৪৮ গ্রাম (প্রায়)। যার দাম ১ লাখ টাকা দরে হলেও হয় সাত লাখ টাকা।
তাই ফেকাহবিদদের বক্তব্য হলো- কাউকে এই পরিমাণ জকাত দেওয়া মাকরুহ যার মাধ্যমে সে নেসাবের মালিক হয়ে যায় এবং যাকাত ওয়াজিব হয়ে যায়। তবে দিলে আদায় হয়ে যাবে।
আর যদি যাকাতগ্রহীতা ঋণগ্রস্ত হয় কিংবা তার পরিবার খুব বেশি অভাবগ্রস্ত হয় তাহলে তাকে সেই পরিমাণের থেকে বেশি দেওয়াও জায়েজ। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ: ২৩/৩১৭)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের পার্থিব বিপদ–আপদের একটিও দুর করবে তার কিয়ামতের দিনের বিপথ আল্লাহ তাআলা দুর করে দিবেন; যে ব্যক্তি কোন অস্বচ্ছল ব্যক্তির সংকট আসান করে দিবে আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার সংকটসমূহ আসান করে দিবেন, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় কোন মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। আল্লাহ তাআলা ততক্ষণ তার বান্দার সাহায্যে থাকেন যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৩০)