লালমাই পাহাড়ে মিলল নতুন প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন

প্রকাশিত: ৪:১৮ অপরাহ্ণ, মে ৬, ২০২৫

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

 

কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে আরও একটি প্রাচীনতম প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান মিলেছে। জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ওয়ার্ডের লালমাই পাহাড়ি এলাকার ধর্মপুর গ্রামে (চারা বাড়ি) সম্প্রতি মাটি খননের সময় এই প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া যায়। রোববার কুমিল্লা প্রতœতত্ত্ব বিভাগ ও জেলা প্রশাসন সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

প্রতœতত্ত্ব বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লালমাই পাহাড়ের ধর্মপুর গ্রামে কয়েক দিন আগে এক ব্যক্তি তার জায়গায় একটি বসতঘর নির্মাণের জন্য মাটি খনন করছিলেন। এ সময় প্রাচীন একটি দেওয়াল ও ভবনের কাঠামোর অংশবিশেষ আবিষ্কৃত হয়। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এতে বিভিন্ন এলাকার কৌতূহলী মানুষজন প্রতিদিন ঐ স্থানটি এক নজর দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। ইতিমধ্যে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঐ স্থানটি পরিদর্শন করেন। এরই মধ্যে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরকর্তৃক সেখানে খননকার্য শুরু করা হয়েছে। গত রোববারও তাদের তত্ত্বাবধানে নিদর্শন উন্মোচনের কাজ চলছিল।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আশা প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই আবিষ্কার হয়তো ধর্মপুর গ্রামের ইতিহাসের একটি গৌরবময় অধ্যায় উন্মোচন করবে এবং ভবিষ্যতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র হিসেবেও পরিচিতি পেতে পারে।’

কুমিল্লায় অবস্থিত প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক ড. নাহিদ সুলতানা বলেছেন, ‘প্রস্তর যুগ থেকে শুরু করে আধুনিক যুগ পর্যন্ত মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশের ক্রীড়াভূমি লালমাই পাহাড়ি অঞ্চল। এখানে খননের মাধ্যমে ৬ষ্ঠ থেকে ১২ শতকের অসংখ্য প্রাচীন পুরাকীর্তি উন্মোচিত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিকভাবে ধারণা—এটি পাহাড়ের ধর্মপুর গ্রামের বহু পুরোনো কোনো রাজা বা জমিদার আমলের স্থাপনার অংশ হতে পারে। তবে পরিপূর্ণ খনন সম্পন্ন হলে এখানে নিদর্শন উন্মোচনসহ এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে যথাযথভাবে অবহিত হওয়া যাবে। তবে চূড়ান্ত তথ্য নিশ্চিত হতে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের বিশ্লেষণ ও গবেষণা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার জানান, লালমাই বৌদ্ধ বিহারের মতো এখানেও প্রতœতত্ত্বের সন্ধান মিলেছে। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের লোকজন স্থানটিতে খননকার্য পরিচালনা করছেন। এখানে আরও ভালো কিছুর সন্ধান মিলবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।