চেনাব নদীর প্রবাহ সাময়িক বন্ধ করল ভারত, ইসলামাবাদের উদ্বেগ

প্রকাশিত: ৪:৫৯ অপরাহ্ণ, মে ৫, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

 

পেহেলগামে জঙ্গি হামলার পর উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে পাকিস্তানমুখী চেনাব নদীর পানি প্রবাহ সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে ভারত। কাশ্মীরের রামবান জেলার বাগলিহার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে পানি আটকে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। একইসঙ্গে কৃষাণগঙ্গা বাঁধেও এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ভারত সরকার। খবর এনডিটিভির।

বাগলিহার বাঁধ সিন্ধু পানি চুক্তির আওতায় নির্মিত হলেও বর্তমানে নদীর পানি সীমিত সময়ের জন্য আটকে রাখার মাধ্যমে পাকিস্তানে প্রবাহ বন্ধ রাখছে ভারত। এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এটি ইসলামাবাদের প্রতি এক ধরনের কূটনৈতিক সতর্কবার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী, চেনাব নদী পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দকৃত পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলোর একটি। চুক্তির শর্ত অনুসারে, ভারত নদীটির পানি ব্যবহার করতে পারবে কেবল কৃষিকাজ, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন বা এমন কাজে যেখানে পানি নষ্ট হয় না—এই সীমিত ব্যবহারের মধ্যে। পূর্ণ প্রবাহ রক্ষা করেই এখানে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও সাম্প্রতিক উত্তেজনায় এ বিধান ভঙ্গ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বাগলিহার প্রকল্প থেকে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। ২০০৮ ও ২০১৫ সালে প্রকল্পটির দুই ধাপ সম্পন্ন হয়। নদীর প্রবাহ রক্ষার শর্তে নির্মিত এই বাঁধে পানি ধারণক্ষমতা সীমিত। ফলে পানি দীর্ঘ সময় আটকে রাখা সম্ভব নয়, এবং নির্ধারিত মাত্রায় পৌঁছানোর পর বাধ্য হয়েই পানি ছেড়ে দিতে হয়।

অন্যদিকে, বান্দিপুর জেলায় নির্মিত কৃষাণগঙ্গা বাঁধের উৎপাদনক্ষমতা ৩৩০ মেগাওয়াট। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধেও পাকিস্তান আপত্তি তুলেছিল, যদিও বিষয়টি নিয়ে সালিশি আদালত ভারতের পক্ষেই রায় দেয়।

এর আগেও পাকিস্তান বাগলিহার বাঁধকে কৌশলগত হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে বিশ্ব ব্যাংকের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। বিশ্ব ব্যাংক নিয়োজিত বিশেষজ্ঞরা পাকিস্তানের কিছু উদ্বেগ মেনে নিলেও বাঁধের উচ্চতা ও স্পিলওয়ের বিষয়ে আপত্তি খারিজ করে দেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সিন্ধু পানি চুক্তির মতো সংবেদনশীল বিষয়কে হাতিয়ার বানিয়ে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের বর্তমান সংকট আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। জলসম্পদকে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করলে দুই দেশের মধ্যকার আস্থার সংকট আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।