
ক্রীড়া ডেস্ক:
নতুন অধিনায়ক লিটন
মিরাজও রয়েছেন নজরে
গেল বছর বিশ্বকাপে খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্ব ছাড়ার গুঞ্জন উঠেছিল। এরপরে শান্তর ইনজুরির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্বে এসেছিলেন লিটন দাস। জিতেছিলেন ৩-০ ব্যবধানে। সেই থেকেই অধিনায়ক হিসেবে লিটনের নাম অনেকটাই অটেচয়েজ হয়েছিল।
রোববার (৪ মে) বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত ২০ ওভারের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিবেন লিটন দাস। এ দিকে সে পর্যন্ত যত সিরিজ রয়েছে, সেগুলোতে ভালো করার ওপরে জোর দিয়েছেন নির্বাচকরা। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের এই ক্রিকেটে মানসিকতা পরিবর্তনের ওপরেও গুরুত্ব দিয়েছে বিসিবি।
আগামী ১৭ ও ১৯ মে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এরপরে পাকিস্তানে গিয়ে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে টাইগার বাহিনী। সেজন্য গতকাল ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। আজ থেকে আনুষ্ঠানিক অনুশীলনও শুরু হয়েছে।
জাতীয় দলের লক্ষ্য নিয়ে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেছেন, ‘জাতীয় দল যখন যেখানেই খেলবে লক্ষ্য থাকবে জয় অর্জনের। কিন্তু জয় অর্জনের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, যে মেজাজে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট যাচ্ছে, যেভাবে রূপান্তর ঘটছে, সেজন্য দ্বিপাক্ষিক সিরিজের মধ্য দিয়ে তৈরি হতে হবে। কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে গড়পড়তা পারফরম্যান্স থেকে ভালো পারফরম্যান্স করতে হলে প্রথমত অনুশীলনের মাধ্যমে সেটিকে রপ্ত করতে হবে, দ্বিতীয়ত দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ঝলক দেখানো। সেজন্য কোনো ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারতেও পারি, কিন্তু আমাদের খেলার ধরনে পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের তরফ থেকে এই বার্তা থাকবে।’
দুই সিরিজের জন্য যে দল ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের না থাকা নিয়ে অনেক কথা উঠেছে। এই বিষয়ে লিপু বলেছেন, ‘মিরাজ আমাদের জাতীয় দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। বিশেষ করে টেস্ট ও ওয়ানডের জন্য, সেটি বিশ্ব র্যাংকিংয়েও প্রতিফলন হচ্ছে, কেবল জাতীয় দলে নয়। ইতোপূর্বে বিশ্বকাপে একটু পিছিয়ে রেখেছিলাম মিরাজকে। কারণ একটা খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়লে তিনটি ফরম্যাটের জন্য সে পিছিয়ে পড়ে। আর টি-টোয়েন্টিতে যে পাঁচজন বোলার থাকেন, তাদের চার ওভার করে বল করতেই হবে। সেক্ষেত্রে শেখ মাহেদী কিছুটা এগিয়ে আছে।’
লিপু আরো বলেছেন, ‘নাহিদ রানা সব সময় আমাদের সহ-অধিনায়ক: শেখ মাহেদী হাসান সঙ্গে থাকলে পাঁচ জন পেসারের জায়গায় চার জন নিয়েও এগিয়ে যাওয়া যেত। ওদিকে একজন ব্যাটার বাড়ানো যেত। সেই সুযোগটা আমাদের কাছে ছিল না। লিটন দাসের। পরে তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন, অনিক ও শন্তর নাম রয়েছে। তাতে এই জায়গায় আরো একটা নাম যুক্ত করার সুযোগ ছিল না। থাকলে আমি খুশি হতাম। তবে তিনি অন্য জায়গায় সুযোগ পাবেন। তিনি আমাদের টি-টোয়েন্টির পরিকল্পনায় একটু পেছন দিকে আছেন। কিন্তু তিনি যে কোনো জায়গায় যে কোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার জন্য চমৎকার ক্রিকেটার। তাকেও আমরা খেলার মধ্যে রাখব। যাতে তিনি টি-টোয়েন্টি সংস্করণে দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে না থাকেন।’
বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেছেন, ‘যে দলটা এখন আছে, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ক্রিকেটারের সংখ্যা খুব কম। আমরা জানি, শেখ মাহেদী কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে অনেকটা অটোমেটিক চয়েজ। ওর যে অভিজ্ঞতা আছে, টেকটিক্যাল জ্ঞান আছে, সেটা আমরা প্রায়ই দেখতে পাই। তা নিয়ে নির্বাচক, কোচসহ সবার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এই মুহূর্তে যদি তাকে এই সুযোগটা দিই, তাহলে দেখতে পারব, কীভাবে সে এটি প্রয়োগ করে। এভাবে হয়তো বিভিন্নজনকে রাখার চেষ্টা করব।’
দুই সিরিজে আট জন বোলার রাখার বিষয়ে প্রধান নির্বাচক বলেছেন, ‘বোলাররা সাধারণত ইনজুরিতে পড়ে সাত ম্যাচ হওয়ার কারণে চাপটা যেন ঠিকভাবে কাটানো যায়। আর বোলিং ইউনিটের মুখ্যভাগ যাচ্ছে দলের সঙ্গে, তারা ট্রেইনার ও কোচদের সঙ্গে থেকে পরবর্তী সিরিজের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিতে পারবেন, যারা ম্যাচ খেলবেন না।’
অনেকের বাদ পড়া নিয়ে লিপু বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সবসময় রানের পেছনে তাড়া করা, স্ট্রাইকরেটসহ অনেক কিছু বিবেচনা করা হয়। সব দিক থেকে এই স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে। সামনে অনেকগুলো সফর আছে, আশা করি বিবেচনায় থাকবেন সকলে।’
আরব আমিরাত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে
বাংলাদেশ স্কোয়াড
লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, শেখ মাহেদী হাসান, তানভীর ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসান সাকিব, নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলাম।