
ডেস্ক রিপোর্ট:
ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু আলোচনা নতুন এক চুক্তির দিকে এগিয়ে চলেছে, এমন ধারণা প্রকাশ করেছে ইসরাইল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক কৌতূহল থাকলেও, এখন পর্যন্ত চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলেছে। ইসরাইল মনে করে, একটি চুক্তি সম্ভব, তবে তারা জানে না যে সেই চুক্তি তাদের সকল দাবি পূরণ করবে কি না।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ‘দ্য জেরুজালেম পোস্ট’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের চলমান পরমাণু আলোচনা একটি চুক্তির দিকে এগোচ্ছে। যদিও তিনি সতর্ক করে দেন, সেই চুক্তি ইসরাইলের প্রধান দাবির সঙ্গে মিলবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইসরাইলের অন্যতম প্রধান দাবি হলো—ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে ফেলা। এর আগের দিন রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেন, “আমি মনে করি একটি চুক্তিতে পৌঁছানো হবে… বোমা হামলা শুরু না করেই আমাদের কিছু একটা হবে।” পরবর্তী আলোচনা আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ইসরাইলি কর্মকর্তারা মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া ৬০ দিনের সময়সীমা শেষ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও ইরানের বিরুদ্ধে তার কড়া অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, একমাত্র গ্রহণযোগ্য চুক্তি হবে সেটিই, যেখানে ইরান তাদের সমস্ত পারমাণবিক অবকাঠামো গুটিয়ে ফেলবে। তিনি উদাহরণ দেন ২০০৩ সালের লিবিয়া-পশ্চিমাদের চুক্তির, যেখানে ত্রিপোলি পারমাণবিক, রাসায়নিক ও জৈবিক অস্ত্র কর্মসূচি ত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। নেতানিয়াহু আরও বলেন, “ইসরাইল বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিকভাবে তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে।” যদিও সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র এখনই ইরানের স্থাপনায় হামলার পক্ষে না থাকলেও, ইসরাইল ভবিষ্যতে হামলার পথ উন্মুক্ত রেখেছে।
পরিস্থিতি যেদিকেই যাক, স্পষ্ট হচ্ছে—একটি সম্ভাব্য চুক্তি শুধু ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যকার সম্পর্কেই নয়, বরং গোটা অঞ্চলের কৌশলগত ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। চুক্তি হলে তা যুদ্ধ এড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে; আবার তাতে ইসরাইল কতটা সন্তুষ্ট থাকবে, তাও একটি বড় প্রশ্ন। তবে আন্তর্জাতিক মহল এই আলোচনা থেকে ইতিবাচক ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে।