সূর্যের পৃষ্ঠের বিস্তারিত ছবি ধারণ করল বিশ্বের বৃহত্তম সৌর টেলিস্কোপ

নিজেস্ব প্রতিবেদক:
আমাদের মাথার ওপরে থাকা সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রা প্রায় দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপের কারণে সূর্যের অভ্যন্তরের বিস্তারিত ছবি তোলা বেশ কঠিন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান ফাউন্ডেশনের নতুন ভিজিবল টিউনেবল ফিল্টার (ভিটিএফ) ব্যবহার করে সূর্যের পৃষ্ঠের বিস্তারিত ছবি তুলেছেন বিজ্ঞানীরা। হাওয়াইয়েতে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম সৌর টেলিস্কোপ ‘ড্যানিয়েল কে ইনোয়ের সোলার টেলিস্কোপ’-এ ধারণ করা ছবিতে সূর্যের পৃষ্ঠে বড় দাগ ও তীব্র চুম্বকীয় কার্যকলাপ দেখা গেছে। সূর্য তার ১১ বছরের সৌর চক্রের সবচেয়ে সক্রিয় পর্যায়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় নতুন ছবিটি ধারণ করা হয়েছে।
মার্কিন জাতীয় বিজ্ঞান ফাউন্ডেশনের নতুন ভিজিবল টিউনেবল ফিল্টার দিয়ে তোলা এটি প্রথম ছবি। ডিসেম্বরের শুরুতে তোলা উচ্চ রেজল্যুশনের এই ছবিতে সূর্যের পৃষ্ঠে হাজার হাজার মাইল বিস্তৃত বিশাল দাগ রয়েছে। ছবিতে যে সূর্যের দাগ দেখা যায়, তার প্রতিটির আকার পৃথিবীর একটি মহাদেশের সমান।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, সূর্যের পৃষ্ঠে থাকা দাগগুলো সৌর শিখা ও করোনাল ম্যাস ইজেকশনের মতো বড় সৌর বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। যখন এই সৌর বিস্ফোরণ ঘটে তখন চার্জযুক্ত কণা মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে। এই কণা পৃথিবীতে আসার পর উপগ্রহকে ব্যাহত করতে পারে।
এনএসএফ ইনোয়ে সোলার টেলিস্কোপের বিজ্ঞানী ফ্রেডরিখ ওয়েগার বলেন, ‘১৮০০ দশকের এমন একটি সৌরঝড় যা ক্যারিংটন ইভেন্ট নামে পরিচিত। সেটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে টেলিগ্রাফ স্টেশনে আগুন ধরে গিয়েছিল। সৌরঝড় কীভাবে আমাদের প্রযুক্তি ও জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে তা বুঝতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোঅপারেটিভ ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ ইন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের বিজ্ঞানী মার্ক মিয়েশ বলেন, সূর্যের দাগ চুম্বকীয় প্লাগের মতো, যা সূর্যের পৃষ্ঠে আসা তাপকে কিছু অংশে বাধা দেয়। এ কারণে দাগকে দূর থেকে অন্ধকার দেখায়। সৌর দাগ সূর্যের পৃষ্ঠের বাকি অংশের তুলনায় শীতল হয়ে থাকে। যদিও এই সূর্যের দাগ শীতল তবু পৃথিবীর যেকোনো চুলার চেয়ে উত্তপ্ত।