
বাগেরহাট প্রতিনিধি:
সুন্দরবনে থামছে না হরিণ শিকার। সংঘবদ্ধ চোরা শিকারি চক্র প্রতিনিয়ত সুন্দরবনে হরিণ নিধন করে চলেছে। গত এক মাসে কোস্ট গার্ডের হাতে উদ্ধার হয়েছে ১২ মণ হরিণের মাংস। আটক হয়েছে ৯ হরিণ শিকারিসহ হরিণ ধরা ফাঁদ ও ট্রলার। সুন্দরবনের কচিখালি এখন হরিণ পাচারের নিরাপদ রুট। হরিণ পাচার প্রতিরোধে বনরক্ষীদের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবন থেকে হরিণ পাচার বৃদ্ধি পেয়েছে। শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালি, চান্দেশ্বর, ডিমের চর এবং শরণখোলা উপজেলার পানির ঘাট ও সোনাতলা এলাকা হরিণ পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বরগুনার পাথরঘাটার চরদোয়ানি, কাঠালতলি ও জ্ঞানপাড়া এলাকার একটি সংঘবদ্ধ চক্র রাতের আঁধারে কচিখালি, চান্দেশ্বর, ডিমেরচর এলাকায় ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে চোরা শিকারিরা সুন্দরবন থেকে হরিণ শিকার করে এনে শরণখোলার সোনাতলা, পানিরঘাট এলাকা দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় হরিণের মাংস পাচার করছে।
গত১৫ এপ্রিল কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোন পাথরঘাটার সদস্যরা পাথরঘাটা কাঠালতলী এলাকা থেকে ৩৫ কেজি হরিণের মাংসসহ এক শিকারিকে আটক করে। আটক শিকারির নাম রেজাউল ইসলাম (২৫)-এর বাড়ি পাথরঘাটার হোসেনপুর গ্রামে। এছাড়া বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন, মোংলার সদস্যরা গত এক মাসের মধ্যে পৃথক পৃথক অভিযানে আট জন হরিণ শিকারিকে আটক করে। এ সময় উদ্ধার করা হয় ৪২৩ কেজি হরিণের মাংস। জব্দ করে বিপুল পরিমাণ হরিণ ধরা ফাঁদ ও কয়েকটি ট্রলার।
সুশাসনের জন্য নাগরিক শরণখোলার সাধারণ সম্পাদক ডা. রুহুল আমীন সুন্দরবন থেকে হরিণ পাচারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কোস্ট গার্ডের হাতে একের পর এক হরিণের মাংস উদ্ধার হলেও বনবিভাগের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করীম বলেন, সুন্দরবনে হরিণ শিকার প্রতিরোধে বনরক্ষীদের টহল কার্যক্রম নিয়মিত চলছে। লোকবলসংকটের কারণে কার্যক্রম কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে বনরক্ষীদের হাতেও মাঝেমধ্যে হরিণ শিকারি আটক ও মাংস জব্দ করার ঘটনা ঘটছে বলে ডিএফও জানিয়েছেন।