শাহজাদপুরে মাদক চোরাকারবারিদের মারপিটে যুবদল কর্মী নিহত

প্রকাশিত: ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

 

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মাদক কারবারিদের হাতে মারধরের শিকার হয়ে আজমির হোসেন ওরফে বিপুল সরকার (৩৫) নামে এক যুবদলকর্মী নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শাহজাদপুর পৌর সদরের রামবাড়ি এলাকার মৃত মাজেদ সরকারের ছেলে বিপুল সরকার। তার দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ তিন সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে আহত অবস্থায় বিপুলকে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির করলে সেখানে অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে দ্রুত জেলার পার্শ্ববর্তী এনায়েতপুরের বেসরকারি খাজা ইউনুস আলী হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ১১টার পর তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে রাতেই শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম আলী সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করেন। তিনি জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বর্তমানে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ গেলে অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী-সেবনকারীরা পালিয়ে যায়।

বিপুলের বড় ভাই নুরুজ্জামানের অভিযোগ, এলাকায় মোকছেদ আলী বগা মেম্বারের ছেলে শহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগী সাদ্দাম হোসেন, রুবেল, কাউসার তরিকুল ও মফিজসহ এলাকার ২৫-৩০ জন মাদক কারবারি ও ইয়াবা সেবনের সঙ্গে জড়িত। বিপুল এলাকায় একজন প্রতিবাদী যুবক। সে বিএনপি-যুবদল নেতাকর্মীদের নিয়ে পাহারা দেওয়ার জন্য এলাকায় বাঁশের মাচাল তৈরির চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দেয় কথিত ওই মাদক কারবারিরা। শুক্রবার রাতে ওই মাদক ব্যবসায়ীরা বিপুলকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

সাবেক কাউন্সিলর আল মাহমুদ বলেন, এলাকায় কথিত সন্ত্রাসী ও উশৃঙ্খল কতিপয় যুবক আছে, যারা প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা ও সেবন করে। তারা একটি তাজা প্রাণকে পিটিয়ে এভাবে হত্যা করে। একজন নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হবে। এটি কি মগের মুল্লুক। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত বিচার চাই।

শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম আলী বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই রাতে ঘটনাস্থলে যাই। আপাতত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুয়েকজনকে থানায় আনা হয়েছে। বিপুলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। এখনো এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। ভিকটিমের পরিবার থেকে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানা গেছে। রাতে ঘটনাস্থলে গেলে বিপুলের স্বজনরা ও স্থানীয়রা পুলিশকে জানান, এলাকায় একটি বাঁশের মাচাল তৈরি নিয়ে দ্বন্দ্বে কতিপয় চিহ্নিত মাদক কারবারি ও সেবনকারীরা বিপুলকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। হাসপাতালের নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফকে মুঠোফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করে শনিবার সকালে পাওয়া যায়নি। সংগঠনটির সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলামিন হোসেন বলেন, নিহত বিপুল ও তার পরিবার বিএনপির সমর্থক বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি।

এদিকে অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ও সংঘর্ষকারীরা এলাকায় না থাকায় তাদের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।