মাদারীপুরে শ্রমিক দলের কমিটি নিয়ে সংঘর্ষ, সভাপতিকে কুপিয়ে হত্যা

মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে শ্রমিক দলের কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি শাকিল মুনশিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন
রোববার (২৩ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের নতুন মাদারীপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিল মুনশি (৩৩) নতুন মাদারীপুর এলাকার মোফাজ্জেল মুনশির ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মাদারীপুর পৌর শ্রমিক দলে লিটন হাওলাদারকে সভাপতি করে একটি কমিটি ঘোষণা করে জেলা কমিটি। এ নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। অনেকে লিটনকে আওয়ামীপন্থী বলে অভিযোগ করে ওই কমিটি বাতিলের দাবি জানান।
গতকাল দুপুরে শহরের একটি সড়কে অবস্থান নিয়ে একাংশের নেতা-কর্মীরা এই কমিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। এতে সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি শাকিল মুনশির সঙ্গে লিটন হাওলাদারের দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়।
রাতে শাকিল তার কয়েকজন অনুসারী নিয়ে শহরের বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় এক সভায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে নতুন মাদারীপুর এলাকায় পৌঁছালে লিটন হাওলাদারের ভাতিজা আল-আমিনের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন যুবক তাদের ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে শাকিলকে হত্যা করা হয়। শাকিলের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা আরও দুজনকে কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়।
শাকিল হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে তার অনুসারীরা দেশি অস্ত্র নিয়ে লিটন হাওলাদারের অনুসারীদের ওপর হামলা চালায়, ফলে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে আহত পাঁচজনকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শাকিলের ভাই রনজু মুনশি বলেন, ‘বিতর্কিত ব্যক্তি লিটন হাওলাদারকে সভাপতি করায় শাকিল প্রতিবাদ করেছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লিটন ও তাঁর ভাতিজা আল-আমিন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেছে। আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার ও দোষীদের ফাঁসি চাই।’
ঘটনার পর থেকেই লিটন ও আল-আমিন পলাতক। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।’