ফিফার কংগ্রেসে বার বার কেন কিরণ

প্রকাশিত: ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৫, ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক:

 

দুই মেয়াদে ফিফার নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০২৩ সালে তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচন করলেও হেরে যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় পদ না থাকলেও ফিফার কংগ্রেস মানেই কিরণের উপস্থিতি। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার প্যারাগুয়েতে অনুষ্ঠেয় ফিফার ৭৫তম কংগ্রেসে যোগ দিতে যাওয়া কিরণকে মঙ্গলবার ভোর ৪টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

কেন তাঁকে প্যারাগুয়ে যেতে দেওয়া হয়নি, সেই কারণটা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না ফুটবল ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ধারণা করা হচ্ছে, কিরণের বিরুদ্ধে কোনো মামলা থাকতে পারে। বাফুফের নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানকে প্যারাগুয়ে যেতে না দেওয়ার দেশের ফুটবলের জন্য লজ্জাজনক বলেই মনে করছেন ফুটবল-সংশ্লিষ্টরা। আর নির্বাহী কমিটির মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বোর্ড সভায় আলোচনা না করেই ফিফার কংগ্রেসে কিরণকে চূড়ান্ত করাটা ভালোভাবে নেননি অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাহী কমিটির এক সদস্য ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘ফিফার কংগ্রেসে যাওয়ার মতো কিরণ ছাড়া কি আর কেউ নেই! বারবার কেন কিরণই বাফুফের প্রতিনিধি হয়ে যাবেন?’

প্রতিবছর ফিফার কংগ্রেসে বাফুফের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যাওয়াটা নিয়মের মধ্যে পড়ে। সে হিসেবে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার পদাধিকারবলে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এবারের কংগ্রেসে গিয়েছেন। তৃতীয় কোনো সদস্য চূড়ান্ত হয় বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপরে। সভাপতি থাকা অবস্থায় কাজী সালাউদ্দিনের আশীর্বাদে কিরণ যেভাবে মাসের পর মাস বিদেশে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, তাবিথ আউয়ালের সময়েও তা করছেন।

নির্বাহী কমিটির অনেকেরই অভিযোগ, সভাপতি চাইলে অন্য কাউকে ফিফার কংগ্রেসে পাঠাতে পারতেন। তাদের কাছে বিষয়টি রহস্যজনক। এবার বিদেশে যাওয়াটা কিরণের ব্যক্তিগত সফর ছিল না। ‘আমাদের সঙ্গে তো একটু আলোচনা করা উচিত ছিল। কিন্তু সভাপতি একক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি খুবই লজ্জাজনক যে বাফুফের একজন সদস্য ফিফা কংগ্রেসে যেতে পারেননি। নিশ্চয়ই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আছে বলেই তো বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’ এভাবেই নিজের হতাশা প্রকাশ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাহী কমিটির এক সদস্য।

নানা ইস্যুতে প্রায়ই সমালোচিত হন মাহফুজা আক্তার কিরণ। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সর্বশেষ নির্বাচনের আগে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন পর্যন্ত হয়েছিল। কোনো এক শক্তির জোরে নির্বাচনের ময়দানে নামা কিরণ বাফুফের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানের চেয়ারটা তাঁর জন্য যেন ন্যস্ত ছিল, নতুন কমিটির দায়িত্ব বণ্টনে তা ফুটে ওঠে। অথচ দুর্নীতি ও অনিয়মের অনেক অভিযোগ ছিল কিরণের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ নারী ফুটবলে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া বিদ্রোহের সঠিক সমাধান না হওয়ার পেছনে তাঁর দায়টাও কম নয়। সালাউদ্দিনের মতো নতুন সভাপতি তাবিথও সবকিছুতে কিরণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, যা নিয়ে খোদ বাফুফেতে অসন্তোষ।