করোনা চীনের ল্যাব থেকে ছড়িয়েছে, তত্ত্বের পক্ষে হোয়াইট হাউসের নতুন ওয়েবসাইট

ডেস্ক রিপোর্ট:
করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে বিতর্কিত ‘ল্যাব লিক’ তত্ত্বকে সমর্থন করে নতুন একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে হোয়াইট হাউস। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) চালু হওয়া এই ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ ভাইরাসটি সম্ভবত চীনের উহানে অবস্থিত একটি পরীক্ষাগার থেকে ফাঁস হয়ে মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে।
এনবিসি নিউজ ও সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘ঈড়ারফ.মড়া’-এ প্রবেশের চেষ্টা করলে এখন ব্যবহারকারীরা হোয়াইট হাউসের নতুন সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করছেন, যেখানে ভাইরাসটির গবেষণাগার-উৎপত্তির তত্ত্বকে জোর দিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি মার্কিন সরকারিভাবে পরিচালিত কোভিড–সম্পর্কিত তথ্যভাণ্ডারের পরিবর্তে সম্পূর্ণ নতুন এক বার্তা বহন করছে।
এনবিসি নিউজ জানায়, এ পরিবর্তন এমন এক সময় এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড তহবিলে বড় পরিসরে বাজেট হ্রাস করা হয়েছে। সিডিসি সম্প্রতি ১১.৪ বিলিয়ন ডলার তহবিল হ্রাস করেছে, যা কোভিড চিকিৎসা ও প্রতিরোধ কর্মসূচিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। অন্যদিকে, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (ঘওঐ) বাতিল করেছে কোভিড গবেষণার জন্য নির্ধারিত একাধিক অনুদান, যার মধ্যে একটি ছিল ৫৭৭ মিলিয়ন ডলারের ওষুধ উন্নয়ন প্রকল্প।
প্রথমদিকে ‘ঈড়ারফ.মড়া’ ছিল কোভিড ভ্যাকসিন, টেস্টিং, চিকিৎসা এবং দীর্ঘ কোভিড সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার নির্ভরযোগ্য উৎস। ‘ঈড়ারফঞবংঃ.মড়া’ সাইটের মাধ্যমে বিনামূল্যে বাসায় কোভিড টেস্ট কিট অর্ডার দেওয়ার ব্যবস্থাও চালু ছিল। কিন্তু এখন এই উভয় ওয়েবসাইট হোয়াইট হাউসের নতুন পাতায় রিডাইরেক্ট হচ্ছে, যেখানে বলা হয়েছে—করোনা ভাইরাস মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হওয়ার আগেই উহানের একটি গবেষণাগারে উদ্ভূত হয়েছিল।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কাইলান ডর বলেন,
“আমরা আগের প্রশাসনের মতো নয়। বর্তমান প্রশাসন ইতিহাসের সবচেয়ে স্বচ্ছ প্রশাসন হতে চায়। উদ্ভাবন ও সৃজনশীল উপায়ে সত্য তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য।”
নতুন এই ওয়েবসাইটের তথ্যভিত্তি তৈরি হয়েছে ডিসেম্বরে প্রকাশিত মার্কিন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের একটি রিপোর্টের ওপর। রিপাবলিকান-নেতৃত্বাধীন উপকমিটি তৈরি করা এ প্রতিবেদনে বলা হয়,
“কোভিড-১৯ সম্ভবত একটি গবেষণাগার দুর্ঘটনার ফল।”
এই উপকমিটি গত দুই বছর ধরে ভাইরাসটির উৎস খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত চালিয়ে আসছে।
‘ল্যাব লিক’ তত্ত্ব মহামারির শুরু থেকেই বিতর্কিত। বৈজ্ঞানিক মহলের একটি বড় অংশ এটিকে ‘অপ্রমাণিত’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মনে করে। তবে ডানপন্থী রাজনীতিক এবং কিছু কট্টর মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ইতোমধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা, বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির, প্রকাশ্যে আল-আকসা ইস্যুর মতোই ল্যাব লিক তত্ত্বে বিশ্বাস প্রকাশ করেছেন এবং এটি নিয়ে প্রচার চালিয়েছেন।