অলস সময় কাটছে শুটারদের

প্রকাশিত: ১:২৪ অপরাহ্ণ, মে ৭, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

 

‘শুটিংয়ে কিছুই হয় না। সব কিছু বন্ধ’–ফোনের ওপাশ থেকে সাবেক শুটার শারমিন আক্তার রতের এই অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশের শুটিংয়ের বেহাল দশা। পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর থেকে এই পর্যন্ত ঘরোয়া প্রতিযোগিতা যেমন হয়নি, তেমনি আন্তর্জাতিক আসরগুলোতেও প্রতিনিধিত্ব করতে পারেননি বাংলাদেশের শুটাররা। অ্যাডহক কমিটি না হওয়ায় শুটিংয়ের ভবিষ্যৎ দেখছেন না শুটাররা। কয়েকজন ক্লাবের উদ্যোগে অনুশীলন করলেও একটা গেমস খেলার জন্য তা যথেষ্ট নয়। ৮-৯ মাস ধরে অভিভাবকশূন্য শুটিংয়ে শুধু হতাশা। অলস সময় কাটছে শুটারদের।

সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের ২৩-৩১ জানুয়ারি পাকিস্তানে হবে সাউথ এশিয়ান গেমস। বাংলাদেশ যে ২৬টি ডিসিপ্লিনে অংশ নেবে তার মধ্যে আছে সম্ভাবনাময় ইভেন্ট শুটিং। অন্য ফেডারেশনগুলোর বেশির ভাগই প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে। শুটিংয়ে তার কিছুই হয়নি। এখনও কমিটিই হয়নি দেশের সম্ভাবনাময় এই ডিসিপ্লিনে। অথচ চার মাসের বেশি সময় আগে নাকি শুটিংয়ের কমিটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে সার্চ কমিটি। কেন শুটিংয়ের কমিটি ঘোষণার প্রজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে না, তা অজানা সার্চ কমিটির আহবায়ক জোবায়েদুর রহমান রানার কাছে।

গতকাল সমকালের কাছে তিনি বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন তো দেবে মন্ত্রণালয়। সেটি তো আর আমাদের হাতে নেই। আমরা চার মাসের বেশি সময় আগে শুটিং ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি দিয়ে রেখেছি। শেষ কো-অর্ডিনেশন মিটিং করতে হয় কমিটি চূড়ান্ত করার জন্য। সেটিও আমরা করে দিয়েছি। এরপর তাদের কাজ হলো প্রজ্ঞাপন করা। শুধু শুনছি করবে করবে। কী সমস্যা সেটি তারা বলতে পারবেন, আমরা জানি না।’

চার মাস ধরে শুটিংয়ের কমিটি কেন ঘোষণা করা হচ্ছে না তা জানতে চাইলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই করছি। যাচাই প্রতিবেদন এখনও আসেনি।’

আমলাতান্ত্রিক এ জটিলতায় শুটারদের ক্যারিয়ার এখন হুমকির মুখে। এরই মধ্যে ঘরোয়া দুটি প্রতিযোগিতা জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এবং এয়ারগান ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে খেলা হয়নি বাংলাদেশের শুটারদের। অথচ এই প্রতিযোগিতায় পদক জিতেছেন মালদ্বীপের মতো দেশের শুটাররা; যারা শুটিংয়ে খুব একটা পদক পান না। গত এপ্রিলে আর্জেন্টিনায় শুটিং বিশ্বকাপে খেলা হয়নি। চলতি মাসে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত জুনিয়রদের বিশ্বকাপেও অংশ নেয়নি বাংলাদেশ। জুনে এই জার্মানিতে সিনিয়রদের বিশ্বকাপে এবং আগস্টে কাজাখস্তানে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সম্ভাবনা দেখছেন না রতœা। শুধু গত ফেব্রুয়ারিতে তারুণ্যের উৎসব হয়েছিল শুটিংয়ে।

এ অবস্থায় শুটাররা কতটা অসহায় হয়ে পড়েছেন তা উঠে এসেছে শারমীন আক্তার রতœার কণ্ঠে, ‘শুটার সবাই হতাশ। অভিভাবকহীন অবস্থার কারণে সবাই খুব বিরক্ত। যারা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আছেন, তারা তো প্রতিযোগিতা শুরু করা কিংবা অন্য কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। এ অবস্থায় আমাদের শুটারদের পারফরম্যান্স তলানির দিকে চলে যাচ্ছে। শুটিং তো অন্যান্য ফেডারেশনের মতো নয় যে, এক সপ্তাহ কিংবা ১০-১৫ দিন অনুশীলন করলেই আগের মতো ফিটনেস চলে আসবে। শুটিংয়ের প্র্যাকটিসটা লাগে দীর্ঘমেয়াদি। সেখানে এখন তো খেলা ৯ মাসের মতো বন্ধ।’

শুটিং রেঞ্জে প্রাণ ফেরানোর জন্য দ্রুতই যেন কমিটি দেয় মন্ত্রণালয় সেই আর্জি শুটারদের।