সড়কে নিহত মেয়ের জিপিএ-৫ পাওয়ার খবরে পরিবারে বিষাদের ছায়া

প্রকাশিত: ৩:৫০ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি,শেরপুরঃ 

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শেরপুরের শ্রীবরদীর মাসুরা মোকাদ্দেস তানাজ ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ ঘটনায় তার বাড়িতে আবারও বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে। কারণ ফলাফল প্রকাশ হওয়ায় যাকে নিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠার কথা ছিল বাড়িতে, কিন্তু সেই তানাজ আজ বেঁচে নেই।

জানা যায়, উপজেলার চরশিমুলচুড়া গ্রামের বাসিন্দা কুয়েত প্রবাসী মোকাদ্দেসুর রহমান তোরাব ও মোছা. মনিরা বেগম দম্পতির তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মাসুরা মোকাদ্দেস তানাজ বড়। সে শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। সেই সুবাদে শেরপুর শহরের নওহাটা এলাকায় বসবাস করতো। চলতি বছর তানাজ এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষার পর গত ৩১ মার্চ কুয়েত প্রবাসী মামাকে নিয়ে আসার জন্য ঢাকার বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় তানাজ ও তার ছোটভাই আনাছ নিহত হয়।

রোববার (১২ মে) এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যায়, তানাজ জিপিএ-৫ পেয়েছে। শুধু বাংলা বিষয়ে এ গ্রেড ছাড়া বাকি সব বিষয়েই এ প্লাস পেয়েছে। বিষয়টি জানার পর তার বাড়িতে ও সহপাঠীদের মধ্যে নতুন করে বিষাদের ছায়া নেমে আসে।সরেজমিনে শহরের নওহাটা এলাকায় তানাজের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত তানাজের মা মোছা. মনিরা ও মোকাদ্দেসুর রহমান তোরাব স্বপ্ন ছিল মেয়েকে চিকিৎসক বানানোর। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় নিভে গেছে তাদের সেই স্বপ্ন।

তারা জানান, তানাজ খুবই মেধাবী ছিল। সে চিকিৎসক হতে চেয়েছিল। কিন্তু দুর্ঘটনায় আমাদের মেয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।তানাজের মামা সোহাবুর রহমান বাপ্পী বলেন, আমার বড় ভাগ্নি তানাজ খুবই আদরের ছিল। কিন্তু এভাবে সে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যাবে কখনোই ভাবিনি।শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবু তারেক জানান, তানাজ খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল। সে খুবই শান্তশিষ্ট ছিল। তানাজ জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিল। এসএসসির ফল প্রকাশের পর তার সহপাঠীরাও তাকে স্মরণ করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ তানাজের মামা কুয়েতপ্রবাসী সোহাবুর রহমান বাপ্পীকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আনতে সপরিবারে ঢাকা যাওয়ার পথে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার জামান ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় এসএসসি পরীক্ষার্থী তানাজ ও তার ছোটভাই আড়াই বছর বয়সী শিশু আনাছ। আহত হয় তাদের বাবা-মাসহ ৩ জন।