যুবককে থানায় আটকে জমি দখলের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৫:৫৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২০

ময়মনসিংহের ভালুকায় এক যুবককে থানায় আটকে রাখার সুযোগে কৌশলে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।  অভিযোগের তীর আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই। অন্যদিকে পুলিশের দাবি বিশৃঙ্খলা এড়াতেই কামরুল ইসলাম নামে ওই যুবককে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

উপজেলার সিডস্টোর উত্তর বাজারসংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ১৬ শতাংশ জমি নিয়ে ৫ বছর ধরে বিরোধ চলছে মৃত আমজাদ আলী ফকির ও মৃত রমজান আলী ডিলারের পরিবারের মধ্যে।

মৃত রমজান আলী ডিলারের ছেলে শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘জমির দখল নিতে মৃত আমজাদ আলী ফকিরের ছেলে হাফিজ মহিউদ্দিন আবুল কাশেমের সঙ্গে দশ লাখ টাকা চুক্তি করেন। এরপরই গত বৃহস্পতিবার রাতে আবুল কাশেম জমির মাটি ভরাট করার উদ্দেশ্যে শতাধিক লোক নিয়ে হাজির হন। এসময় তাদের হাতে দা, লাঠি ছিল। আমার মা সখিনা বেগম বাধা দিলে তাকে মারধর করেন। অবশেষে আমার ছোট ভাই কামরুল ইসলাম ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে পুলিশ আসে। তারা মাকে হাসপাতালে ভর্তি করে ছোট ভাইকে থানায় নিয়ে যায়।’

ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সখিনা বেগম বলেন, স্বামীর ক্রয়কৃত জমি রক্ষা করতে ওদের বাধা দিতে ট্রাকের সামনে দাড়িয়েছিলাম। পুলিশ তাদের পক্ষ নিয়ে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে ছেলেকে থানায় নিয়ে সারারাত বসিয়ে রেখেছে। সেই সুযোগে ওরা জমিতে মাটি ভরাট করে টিনের চালা তুলেছে।

ছেলে কামরুল ইসলামও একই অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত হাফিজ মহিউদ্দিন বলেন, ২৫ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে আমার মা রাহাতান নেছা বিবি সাবেক ২৩ নম্বর দাগে ১৬ একর জমি ক্রয় করেন। মা মারা যাওয়ার পরে আমরা ভাই-বোনেরা জমির মালিক হই। আমার জমি আমি দখলে নিয়েছি।

আবুল কাশেম বলেন, আমি ব্যবসায়ী। মাটি ভরাট করা আমার ব্যবসা। মহিউদ্দিন বলেছে, তার জমিতে মাটি ভরাট করে দিতে, তাই আমি দিয়েছি। আমি কারো জমি দখল করতে যাইনি।

ভালুকা থানার ওসি মাইন উদ্দিন বলেন, প্রকৃতপক্ষে জমির মালিক মহিউদ্দিন। জমিতে মাটি ভরাটের কাজ চললে সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় কামরুল ইসলামকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

ময়মনসিংহ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, ‌‌‌‌‌‌‌‌ ‌‌‌‌‌‌‌‘কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া পুলিশ কাউকে আটক করতে পারে না। এটা রংফুল কনসাইনমেন্ট।  এটা এক ধরনের ফৌজদারি অপরাধ।’

 

স্থানীয়রা জানান এই জমি নিয়ে অনেকবার সালিশ হয়েছে। কোনো সমাধান হয়নি। ২০১৫ সালে আদালতে মামলাও হয়।