মান্নানের মতো ছাত্র নেতাদের সংগ্রামের ফলে দেশের উন্নয়ন করতে পারছি : প্রধানমন্ত্রী
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
![মান্নানের মতো ছাত্র নেতাদের সংগ্রামের ফলে দেশের উন্নয়ন করতে পারছি : প্রধানমন্ত্রী](https://www.newspostbd.com/wp-content/uploads/2020/01/pm-songsod.jpg)
সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসব ছাত্রনেতারা ’৭৫ পরবর্তী সময়ে দল পুনর্গঠনে বিরাট অবদান রেখে গেছেন। তাদের সংগ্রামের ফলে আমরা আজ দেশের উন্নয়ন করতে পারছি।
তিনি আজ সংসদের বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি বৈরি পরিবেশে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি এবং ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনা করে আজ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই দেশের এই উন্নতি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, আব্দুল মান্নান ছাত্রজীবন থেকে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, জিয়া, এরশাদ, খালেদা বিরোধী আন্দোলনসহ প্রতিটি আন্দোলনে বলিষ্ট ভূমিকা রেখেছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শওকত, অলি, মহসিনকে পিটিয়ে জঘন্য হত্যাকান্ড এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরশাদের আমলে সেলিম, দেলোয়ারকে ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যা, রাউফন বসুনিয়া, চুন্নুসহ বহু ছাত্রকর্মী বিভিন্ন সময় সরকারের অত্যাচার নির্যাতনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষ ও মেধাবী ছিল। প্রচার সম্পাদক থাকাকালে প্রতিটি লিফলেট ও বিবৃতি লেখা অত্যন্ত চমৎকারভাবে সম্পাদন করতে পারতো।
তিনি বলেন, ‘প্রচন্ড ইচ্ছা ছিল আমার হাতে গড়া ছাত্রনেতা এরাই একদিন দলের নেতৃত্ব দেবে। এরাই আওয়ামী লীগকে সামনের দিকে নিয়ে যাবে, যখন আমরা থাকবো না। কিন্তু চোখের সামনে যখন এরা চলে যায় তখন খুব কষ্ট হয়, খুবই দুঃখজনক।’
আব্দুল মান্নানকে ছাত্রলীগের সভাপতি করার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর আব্দুল মান্নানকে ছাত্র নেতা হিসেবে পেয়েছিলাম। ‘৮৩ সালে তাকে ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয়। এর পেছনে একটি ঘটনা রয়েছে- ‘ছাত্রনেতাদের আমি একা একা ইন্টারভিউ নিতাম। এন্টারভিউ নিতে গিয়ে একটা প্রশ্ন ছিল-যদি তোমাকে সভাপতি না করা হয় তাহলে তুমি কি করবে? অনেকে হাউমাউ করে কেঁদে দিত। তবে একটি ছেলেকে এই প্রশ্ন করার পর তার জবাব ছিল-না বানালে কিছু করার নেই, আমি আপনার সাথে রাজনীতি করে যাবো। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, তাকেই বানাবো।’ ওই সময়টা ছাত্রলীগের জন্য অত্যন্ত দুঃসময় ছিল। অনেকেই ৮২ সালে ছাত্রলীগ ছেড়ে চলে গিয়েছিল, সেখানে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করা খুব দরকার ছিল এবং তার সেই সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল।’
তিনি বলেন, তাকে আওয়ামী লীগের প্রচার ও সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। এরপর তাকে বগুড়ার মতো কঠিন জায়গায় তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। সেখানে রাস্তা-ঘাট খুবই খারাপ ছিল, একটি অনুন্নত জায়গা। সেখান থেকে সে পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মৃত্যুর দুই দিন আগে আমার সাথে সে অনেক কথা বলে। নানকসহ অনেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে এসেছে, ও আসেনি, মনে একটু দুঃখ ছিল। আমি তাকে সান্তনা দিয়ে বলেছি- আমিতো তোমাকে ফেলে দেইনি। তোমাকেতো সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছি। কথা বলার সময় দেখলাম দেখলাম তার শারিরীক অবস্থা খুব একটা ভাল নেই। আমি তাকে বললাম ভালভাবে চেকআপ করো এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা নাও। ঠিক এর পরপরই সে হাসপাতালে ভর্তি হয়। প্রতিদিন ডাক্তারের সাথে কথা বলে চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিয়েছি। যেদিন সে মারা যায়, ওই দিন রাতেও ডাক্তারের সাথে কথা বলে বিদেশে পাঠানো সম্ভব কিনা জানতে চাইলাম। কিন্ত যাক্তার তাতে সম্মতি দেয়নি।’
তিনি তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের পতি সমবেদনা জানান এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, অসুস্থ ছিল কিন্তু এভাবে চলে যাবে তা আমরা ভাবতে পারিনি।