ঢাকাগামী তিন ট্রেন বন্ধের ঘোষণায় ক্ষোভে ফুঁসছে ঝিনাইদহবাসী

প্রকাশিত: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, মে ১৫, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি,ঝিনাইদহঃ  

খুলনা থেকে ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর রেলস্টেশন হয়ে ঢাকাগামী সরাসরি চলাচলকারী তিনটি ট্রেন চিত্রা, বেনাপোল ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস বন্ধের ঘোষণায় ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। জুন থেকে যশোরের পদ্মবিলা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা রেলসেবা চালু হওয়ায় এ রুটের সরাসরি ঢাকা রেলসেবা বন্ধ হয়ে যাবে। এ ঘোষণার পর থেকে ঝিনাইদহের দুইটি স্টেশন থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী যাত্রীরা বিভিন্ন মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।তারা ঘোষিত নতুন রেলসেবার সঙ্গে খুলনা থেকে মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর হয়ে ঢাকাগামী চলাচলকারী ট্রেনগুলো বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন। দাবি না মানলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোরের রুপদিয়া বা পদ্মবিলা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা এবং চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে ঢাকাগামী নতুন দুই রেলসেবা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুন থেকে নতুন এ রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু করবে। ফলে খুলনা থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী তিনটি ট্রেনের ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর হয়ে যাতায়াত বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ফলে নতুন দু’টি রুট চালু হলে ঝিনাইদহের যাত্রীরা রেলযোগে ঢাকায় যাতায়াতের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।

মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, খুলনা থেকে প্রতিদিন সকালে, দুপুরে ও রাতে তিনটি ট্রেন যশোর, ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর এবং চুয়াডাঙ্গা হয়ে ঢাকায় যেত। ঢাকায় যাতায়াতকারী তিনটি ট্রেনেরই মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতী রয়েছে। এর ফলে এ অঞ্চলের মানুষের ঢাকা-খুলনা যাতায়াতের বিশাল একটি সুযোগ ছিল। এছাড়া ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে। এখন খুলনা থেকে ঢাকাগামী ট্রেনগুলো বন্ধের সংবাদে আমরা মর্মাহত। নতুন রুটে ট্রেন চালু হচ্ছে এটা দেশের মানুষের জন্য দারুন সু-খবর কিন্তু চলাচলকারী ট্রেন বন্ধ করে কেন?

কোটচাঁদপুর রেলস্টেশন এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম মল্লিক বলেন, আমাদের রেল সুবিধা বঞ্চিত করে নতুন রুট চালু হতে পারে না। নতুন রুট চালু হোক, নতুন নতুন এলাকার মানুষ রেলের সুবিধা পাক এটা ভালো, কিন্তু আমাদের চালু থাকা ট্রেন কেন বন্ধ করা হবে। ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর হয়ে ঢাকাগামী চলাচলকারী ট্রেন বহাল রাখার দাবি জানান তিনি।

মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনের মাস্টার শেখ শাহজাহান জানান, ট্রেন চালু থাকলে যাত্রীদের সুবিধা হয় এটা স্বাভাবিক। চালু ট্রেন বন্ধ করলে মানুষের একটু অসুবিধাতো হয়ই। যশোর পদ্মবিলা থেকে ঢাকা ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে ঢাকা রেলসেবা চালু করতে যাচ্ছে রেলওয়ে। এর ফলে ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর স্টেশন থেকে যাতায়াতকারীদের জন্য তিনটি ট্রেন বন্ধের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ দু’টি স্টেশনের যাত্রীদের সুবিধার জন্য শাটল ট্রেন চালু করবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি মাস্টার প্লান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বলে যোগ করেন এ স্টেশন মাস্টার।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার জানান, আওয়ামী শাসন আমলে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় যশোর থেকে ঢাকার নতুন রেলপথ চালু হচ্ছে। তবে আমাদের মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর রুটের ৩টি ট্রেন বন্ধ হলে এই এলাকার যাত্রীরা রেল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে যেটা কারোরই কাম্য নয়। যার কারণে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এরইমধ্যে কথা বলেছি ট্রেনগুলো এই রুটে রাখা যায় কিনা সেই ব্যাপারটা বিবেচনা করতে। সামনে মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে আবার এই বিষয়ে আমি কথা বলবো। আশা করি ভালো একটা সংবাদ আমাদের জন্য আসবে।