‘জলবায়ু অভিঘাতের সময়ে চার লাখ গাছ কাটা আত্মঘাতী ও ক্ষমার অযোগ্য’

প্রকাশিত: ৪:০২ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

দেশের তিস্তা সেচ প্রকল্পের সংস্কার ও সম্প্রসারণের নামে অন্তত চার লাখ গাছ কাটছে বন বিভাগ। এমন কর্মকাণ্ডের নিন্দা, প্রতিবাদ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। দলটি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে দেশ এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এমন বাস্তবতায় প্রকল্প সম্প্রসারণের নামে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত অন্যায়, আত্মঘাতী ও ক্ষমার অযোগ্য।

সোমবার (১৩ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, সারাদেশের তাপপ্রবাহ এ বছর ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে যখন গাছ কাটা শুধুমাত্র একটা নির্মমতা। যে প্রকল্পটি গ্রহণ করাই জনবান্ধব হয়নি, সেই প্রকল্প যখন পরিবেশের ক্ষতি করে, তখন এটা কয়েক স্তরে ক্ষতিসাধন করে। দেশবাসী মনে করে, এখনই গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। একসঙ্গে কেন এত গাছ কাটা হলো, তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তারা বলেন, ভয়াবহ তাপপ্রবাহের এমন পরিস্থিতিতে এত গাছ একসঙ্গে কাটা অন্যায়। সেচ খাল সংস্কার ও সম্প্রসারণের নামে এক হাজার চারশ’ কোটি টাকার যে প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার, এর কোনো প্রয়োজন নেই। অপ্রয়োজনে বিপুল অর্থের অপচয় হচ্ছে। এটা কোনো কাজেই আসবে না। এ জন্য আবার গাছগুলো কাটা হচ্ছে। গাছগুলো না কাটলে অর্থের অপচয় করতে পারতো না।

নেতৃদ্বয় আরও বলেন, রক্ষকই যখন ভক্ষকে পরিনত হয়, তখন আর কিছুই করা যায় না। যেখানে বন বিভাগের উচিত গাছ লাগানো, সেখানে বনবিভাগ পুরো ক্যানেলকে এখন গাছশূন্য করে দুর্নীতিবাজ আমলা আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেট ভরছে। সামাজিক বনায়ন প্রকল্প অনুসারে, গাছ পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার পর কাটার কথা। আর নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে ৫৫ শতাংশ অর্থ পাওয়ার কথা পরিচর্যাকারীদের, ২০ শতাংশ পাবে পাউবো, বাকি ২৫ শতাংশ যাবে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও খাতে। তিস্তা সেচ প্রকল্পের জন্য গাছ কাটা হলেও যারা পরিচর্যা করেছেন, তারা কিছুই জানে না। বরং জানা যায়, পরিচর্যাকারীরা গাছগুলো পরিচর্যা করে বড় করলেও এখন পর্যন্ত তারা তাদের বেতনের কোনো টাকা পায়নি। গাছ বিক্রির টাকা আদৌ তারা পাবে বলে বিশ্বাস করে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে পুরো দেশই আজ লুটেরাদের লুটের বস্তুতে পরিণত হয়েছে।

বিবৃতিতে তারা দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয় রোধে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তারা পরিবেশের বিরুদ্ধে কাদের স্বার্থে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে দায়িদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।