করোনার প্রভাবে পণ্ড দুই উৎসব বিষাদে রূপ নিচ্ছে ঈদ বাজার প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ৮:৩৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২০

এসএম দেলোয়ার হোসেন
সকল প্রস্তুতি নেওয়ার পরও করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) প্রভাবে এবার পণ্ড হয়ে গেছে উৎসবপ্রেমী বাঙালির উৎসব পবিত্র শবেবরাত ও পহেলা বৈশাখ। এ দু’টি উৎসব ঘিরেও স্বপ্ন বুনেছিলেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। কিন্তু করোনার ভয়াল থাবায় সরকারের নির্দেশে সব বন্ধ থাকায় সেই দু’টি উৎসবের বাজার পণ্ড হয়ে গেছে। একই সঙ্গে রমজানের ঈদ বাজার ঘিরে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসায়ীদের সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া থাকলেও করোনার পরিস্থিতিতে কেনাবেচায় বড় ধরনের লোকসানের দিকে ঝুঁকছে। ঈদুল ফিতরে এসএমসই খাতের ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি পরিমাণের বাজার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। গত একমাস ধরে মার্কেটসহ দোকানপাট বন্ধ থাকায় আয়ের সব পথ বন্ধ হওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে ব্যয়ের পরিধি। এবারের রমজানের ঈদ বাজার ঘিরে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের আর্থিক ধসের শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। বিষাদে রূপ নিচ্ছে ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের ঈদ বাজারের সকল প্রস্তুতি। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনার এমন পরিস্থিতি বিরাজ করলে হুমকির মুখে পড়বে এ খাতের অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার ঈদ বাজার। ইতোমধ্যেই করোনার প্রভাবে মূলধন হারিয়ে ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীরা এখন পথে বসতে শুরু করেছে। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এবং ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে দ্রুত এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করে সরকার ঘোষিত সিঙ্গেল ডিজিটের মধ্যেও ৪% হারে ব্যাংক ঋণ প্রদান ও আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ এখনই নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে তৃণমূলের উদ্যোক্তাদের সাথে ক্রেতাদের সংযুক্ত করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। গতকাল রোববার ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২০৯টি দেশ ও অঞ্চলে ২ লাখ ৭ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বৈশ্বিক মহামারি প্রাণঘাতী করোনার থাবা থেকে বাদ পড়েনি বাংলাদেশও। এ দেশে চলতি বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর থেকে প্রায় নিয়মিত কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর এবং মৃত্যুর খবর দিচ্ছে আইইডিসিআর। এমন পরিস্থিতিতে করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সবকিছুতেই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পঞ্চম দফায় ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে তা আগামী ৫ মে পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত ১৫২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯১৩ জনে। আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট-শপিংমল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি নির্দেশনা মেনে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৪ মার্চ থেকেই ঢাকা (গভঃ) নিউ মার্কেট, ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, চাঁদনী চক মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, নূর ম্যানশন, ইসমাইল ম্যানশন, ধানমন্ডির ৬/এ রোডের অভিজাত শপিংমল আনাম র‌্যাংগস প্লাজা, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, বঙ্গবাজার, ইসলামপুর পাইকারি মার্কেট, সদরঘাটস্থ ২৫টি পাইকারি কাপড়ের মার্কেট, কামরাঙ্গীরচর রসুলপুর ব্রিজ মার্কেট, উল্টরার রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্সসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকার লাখ লাখ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। প্রতিটি মার্কেটর আশপাশে শুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। মার্কেটগুলোতে পালাক্রমে কেবল নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন প্রহরীরা। এসব মার্কেটের প্রতিটি দোকানে গড়ে অন্তত ৪ জন করে কর্মচারীর রুটি-রুজির পথও বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক কর্মচারী সন্তান-পরিবার নিয়ে এখন অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর দিনযাপন করছেন।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার সংক্রমণের আগেই রাজধানীর পাইকারি কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে গেল ৯ এপ্রিল পবিত্র শবেবরাত ও ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের কেনাকাটা নিয়ে সকল প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। এছাড়া রমজানের ঈদ বাজারের কেনাবেচা ঘিরে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই কোটি কোটি টাকার পণ্য ক্রয় করে দোকানে তুলেছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই তা প্রতিরোধে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় এ সংক্রমণরোধে বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরণের মার্কেট-শপিংমল। করোনাভাইরাসের কারণে কোন কিছুই চলছে না স্বাভাবিক নিয়মে। জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছুই বন্ধ রেখে থাকতে হচ্ছে ঘরে। বাতিল করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক-সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব অনুষ্ঠান। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দঃ) বণিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান জানান, তিনি পাইকারি তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী। তাদের মার্কেটে সব মিলিয়ে ১ হাজার ২৪১টি দোকান রয়েছে। মার্কেটের নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্ন কর্মী রয়েছে সর্বমোট ৫৩ জন। প্রতিটি দোকানে গড়ে ৪ জন করে সর্বমোট ৫ হাজার কর্মচারী কাজ করেন তাদের এই মার্কেটে। গেল ৯ এপ্রিল পবিত্র শবেবরাত ও ১৪ এপ্রিল বাঙালী সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখ ঘিরে প্রতিটি দোকানে কেনাবেচার জন্য ব্যবসায়ীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে পরিধেয় পোশাকসহ কোটি কোটি টাকার মালামাল কিনে দোকানে তুলেছিলেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে ব্যবসায়ীদের সব হিসাব-নিকাশ। তিনি জানান, করোনার প্রভাবে পণ্ড হয়ে গেছে বাঙালির অন্যতম উৎসব পবিত্র শবেবরাত ও পহেলা বৈশাখের বাজার। এদিকে আসন্ন রমজানের ঈদ বাজার ঘিরে ক্রেতাদের চাহিদার কথা গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে গত দু’মাস আগ থেকেই ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কেনাবেচার প্রস্তুতি নিলেও সেই প্রস্তুতিও এখন বিষাদে রূপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে মূলধন হারিয়ে লোকসানের ঘাণি টেনে তাদের মতো ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলেও জানান তিনি। সেই সঙ্গে এখন থেকেই যেন মলিন হচ্ছে ঈদের আনন্দও।
মিজানুর রহমান জানান, করোনার প্রভাবে মার্কেট বন্ধ থাকলেও টানা একমাস ধরে কাজ করে যাচ্ছেন মার্কেটের নিরাপত্তা-পরিচ্ছন্ন কর্মীসহ সর্বমোট ৫৩ জন কর্মচারী। কেনাবেচা ও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় ৫৩ জন কর্মচারীর মাসিক বেতনও নির্ধারিত সময়ে তারা দিতে পারেননি। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও মানিবক বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত ১২ এপ্রিল ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দঃ) বণিক সমিতির সভাপতি সহিদ উল্লাহ সহিদ ও সাধারণ সম্পাদক একেএম মাহাবুবুর রহমান স্বপনের উদ্যোগে মার্কেটের দোতলায় সমিতির কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন কমিটির নেতৃবৃন্দ। সেখানে সিদ্ধান্তক্রমে ধারদেনা করে মার্কেটের নিরাপত্তা-পরিচ্ছন্ন কর্মীসহ মোট ৫৩ কর্মচারীকে মার্চ মাসের মোট সাড়ে ৬ লাখ টাকা বেতন দেওয়া হয়। করেনার কারণে এখন ঈদ বাজারও পণ্ড হওয়ার শঙ্কায় গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তারা। মার্কেটের প্রতিটি দোকানে কর্মচারীর বেতন, দোকান ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ বাবদ গড়ে প্রতিমাসে প্রায় পৌনে ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়। বেচাকেনা করেই ব্যয়ের এই টাকার জোগান দেন ক্ষুদ্র ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা। মার্কেট বন্ধ থাকায় দোকান মালিকরা ৫ হাজার কর্মচারীর একমাসের ৬ কোটি টাকা বেতনও দিতে পারছেন না। প্রতিটি দোকানে গড়ে প্রতিদিন বিক্রি করা হতো ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা। মার্কেটের ১২৪১টি দোকানে গত একমাসে গড়ে প্রায় ৫৬ কোটি থেকে ৯৪ কোটি টাকার বেচাকেনা বন্ধ থাকায় আর্থিক লোকসান গুণছেন ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীরা। কেনাবেচা না থাকায় করোনার কারণে সেই বেচাবিক্রি এখন শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সময়ের ব্যবধানে কেবলই বাড়ছে ব্যয়ের পরিধি। এমন বড় ধরনের ক্ষতি কবে পুষিয়ে উঠবেন তা তাদের অজানা। মিজানুর রহমান বলেন, সরকার যদি আর্থিক সহযোগিতা না করে, তাহলে এমন ক্ষতি সহসাই পোষানো সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে বেঁচে থাকারও কোন উপায় থাকবে না। তাই সহজ শর্তে সব ব্যবসায়ীকে ঋণদানের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দঃ) বণিক সমিতির সভাপতি সহিদ উল্লাহ সহিদ ও সেক্রেটারি মাহাবুবুর রহমান স্বপনসহ মার্কেট কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, করোনার ক্ষতি মোকাবেলায় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে সরকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, তাতে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে বর্তমানে করোনার প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যেই মূলধন হারিয়ে পথে বসেছে। তাদের বাঁচাতে দ্রুত এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করে সহজ শর্তে ঋণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ সরকারকে এখনই নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীরা পথে বসলে অর্থনীতির চাকা সচল করা কঠিন হয়ে পড়বে। অর্থনীতি সচল রাখতে এখনই উদ্যোগ না নিলে ব্যবসায়ীদের বাঁচার আর কোন পথই থাকবে না বলে জানান বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।

এদিকে ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুর রহমান টিপু জানান, কেবল ঢাকা মহানগর এলাকায় আড়াই লক্ষাধিক ব্যবসায়ী রয়েছে। তাদের প্রতিটি দোকানে গড়ে ৩ জন করে কর্মচারী নিয়োজিত থাকলেও সব মিলিয়ে সাড়ে ৭ লাখ কর্মচারী রয়েছে। দোকান মালিক-কর্মচারী মিলে ১০ লাখেরও বেশি জনবল রয়েছে। করোনার প্রভাবে ইতোমধ্যেই ব্যবসায়ীদের দু’টি উৎসব পবিত্র শবেবরাত ও পহেলা বৈশাখের সকল প্রস্তুতিই পণ্ড হয়ে গেছে। একই সঙ্গে আসন্ন রমজানের ঈদ বাজার ঘিরেও গত দু’মাস আগে নেওয়া সকল প্রস্তুতিও ভেস্তে যাচ্ছে। দু’টি উৎসবের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া থাকলেও বেচাকেনা না হওয়ায় ইতোমধ্যেই সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার মূলধন হারিয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। ঈদ বাজার ঘিরে ব্যবসায়ীরা যে আশার আলো দেখেছিল, করোনাকাণ্ডে তাও এখন বিষাদে রূপ নিচ্ছে। তিনি বলেন, করোনার কারণে মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ থাকায় সাড়ে ৭ লাখ কর্মচারীর বেতন দেওয়া তো দূরের কথা, দোকান মালিকদের সংসার চালানোও এখন অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। মূলধন হরিয়ে পথে বসছে এসব ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করে তা অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, সরকার যে ব্যাংকঋণে সিঙ্গেল ডিজিট ঘোষণা করেছে তাতে ৯% এর আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। বিষয়টি এফবিসিসিআইকে দায়িত্ব না দিয়ে ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে দায়িত্ব দিলে তা বণ্টন করা সহজ হতো। তবে ব্যবসায়ীদের এসএমই লোন ৪% করা হলে এবং সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হলে ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়াতে পাড়বে বলে জানান ব্যবসায়ী নেতা আরিফুর রহমান টিপু।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনের (এসএমই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর শুধু পহেলা বৈশাখ আর ঈদুল ফিতরে এসএমই খাতের ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি পরিমাণের বাজার হুমকির মুখে পড়েছে। সেইসাথে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। তিনি জানান, এ শিল্পে উদ্যোক্তা রয়েছেন প্রায় ৭৮ লাখ।


অর্থনীতি বিশ্লেষক ঢাবি’র অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা জানান, করোনার প্রভাবে ইতোমধ্যেই ব্যবসায়ীদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা এখন থেকেই পরিকল্পনা না নিলে ভবিষ্যতে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া আরও কঠিন হবে। দেশীয় পণ্যের চাহিদা বাড়ানো, সুষ্ঠু আর্থিক সহায়তা এবং সময়োপযোগী উদ্যোক্তাবান্ধব নীতিমালা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।