ডেস্ক রিপোর্ট:
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি-পরিচিতি ও গোপনীয়তা রক্ষা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার অভিনেতা সিমন লি এখন ঠিক এমনই এক সমস্যায় পড়েছেন, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তার নিজের চেহারা।
সম্প্রতি জানা গেছে, বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম—যেমন টিকটক বা ইনস্টাগ্রামে তার ডিজিটাল মুখাবয়ব ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর ও বিতর্কিত স্বাস্থ্যবিষয়ক ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। কখনো তিনি শল্য চিকিৎসক, কখনো আবার স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ হিসেবে উপস্থিত হচ্ছেন এই ভিডিওগুলোতে—যেগুলোতে ওজন কমানোর প্রতারক পদ্ধতি কিংবা বরফ পানিতে গোসলের মতো অবৈজ্ঞানিক স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সিমন লি নিজেই স্বীকার করেছেন, একটি এআই-ভিত্তিক মার্কেটিং কোম্পানির সঙ্গে তিনি তার চেহারা ব্যবহারের চুক্তিতে সই করেছিলেন। সেই চুক্তি অনুযায়ী এখন তিনি ভিডিওগুলো মুছে ফেলার দাবি জানাতে পারছেন না। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘যদি এগুলো সুন্দর কোনো বিজ্ঞাপন হতো, তাহলে আমি খুশি হতাম। কিন্তু এখন যা হচ্ছে, তা একপ্রকার প্রতারণা।’
সিমনের অভিজ্ঞতা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে নিয়ে এসেছে—এআই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে তারকাদের ক্লোন বানিয়ে বিপণন কার্যক্রম চালানো এখন অনেক সহজ ও কম খরচের কাজ। বাস্তব অভিনেতাদের তুলনায় ডিজিটাল ক্লোন দিয়ে তৈরি ভিডিও আরও বেশি বিশ্বাসযোগ্য ও বাস্তবসম্মত মনে হয়, ফলে প্রতারণামূলক প্রচারণায় এগুলোর ব্যবহার বাড়ছে।
চুক্তির আওতায় তারকারা কয়েক হাজার ইউরো পারিশ্রমিক পেলেও অধিকাংশ সময় তাতে এমন সব শর্ত থাকে, যেগুলো তারা ভালোভাবে না বুঝেই সম্মতি দেন। দ্রুত অর্থের লোভে অনেকেই খুঁটিনাটি বিষয় উপেক্ষা করেন।
এ প্রসঙ্গে ব্যবসা-আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী অ্যালিসা মালচিওডি বলেন, ‘আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাদের অধিকাংশই চুক্তির বিষয়বস্তু পুরোপুরি অনুধাবন করতে পারেননি।’ তিনি এই ধরনের চুক্তি করতে যাওয়ার আগে সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
সিমনের এই অভিজ্ঞতা বিশ্বব্যাপী তারকাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হয়ে উঠেছে—ডিজিটাল পরিচয়ের দখল যেন হেলায় না হারিয়ে যায়।